খড়্গপুর শহর। এই জায়গাকে রেলশহর বলেই চেনে বাংলার মানুষ। আর এবার রেলের জমিতেই দুই রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসের অস্তিত্ব মিলল। একটি পার্টি অফিস তৃণমূল কংগ্রেসের। অপরটি বিজেপির। এখানে বিজেপির আগে সাংসদ ছিল। এখন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। বিজেপির নেই। বিজেপির যখন সাংসদ ছিল তখন এই পার্টি অফিস রেলের জমিতে গড়ে ওঠে। তা দেখে গড়ে তোলে তৃণমূল কংগ্রেসও। এবার এই দুই রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিস উচ্ছেদ করতে প্রস্তুতি শুরু করল রেল। তাই এবার তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির দু’টি পার্টি অফিসে নোটিশ সাঁটানো হয়েছে বলে খবর। যা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।
দুই রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে সাঁটানো নোটিশে বলা হয়েছে, অনুমোদন ছাড়াই গড়ে ওঠা পরিকাঠামো একসপ্তাহের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে। এমনকী রেলের পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বলা হয়, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি পার্টি অফিস এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের তৈরি পার্টি অফিস সরানোর জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে। একসপ্তাহের মধ্যে ওই পার্টি অফিসগুলি না সরালে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। রেলের জমি দখলমুক্ত করতে হবে। তাই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই বিষয়ে রেলের সিনিয়র ডিসিএম নিশান্ত কুমার বলেন, ‘রেলের জায়গা দখল করা বেআইনি। এমন কাজ করলে নোটিশ তো মিলবেই।’
আরও পড়ুন: কার্ডিয়াক সার্জারি হয়েছে রাজ্যপালের, কেমন আছেন আনন্দ বোস? রাজভবনে তৎপরতা
গত এপ্রিল মাসে রেলের পক্ষ থেকে তাদের জমিতে থাকা পার্টি অফিসের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। তারপরও টনক নড়েনি রাজনৈতিক দলগুলির। রেলের জমিতে গড়ে ওঠা পার্টি অফিস সরাতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু তা সরানো হয়নি। তখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল। তাতেও কাজ হয়নি। এই বিষয়ে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর রোহন দাসের বক্তব্য, ‘দলের সঙ্গে কথা বলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ আর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর অনুশ্রী বেহেরার কথায়, ‘ওরা ভাঙলে আমিও ভাঙব।’
তবে এই নোটিশের পর পাল্টা রেলের উপর চাপ তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। বিজেপি কাউন্সিলর অনুশ্রী বেহেরা বলেছেন, ‘মানুষের কাজ করি আমরা এবং পরিষেবা দিয়ে থাকি। সেটা কোথা থেকে করব রেলকে তা ভাবতে হবে।’ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, ‘রেলকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে কোন পথে আমরা যাব। ওরা যা মনে করবে তাই হবে নাকি। রেল এলাকায় কি পুরসভা পরিষেবা দেয়? তাই এখানে কাউন্সিলরদের দলীয় অফিস থাকবে। যেখান থেকে তারা পরিষেবা দেবে। সেটা ভাঙার অধিকার রেলের নেই।’