আমাদের ভাগ্য আমাদের কর্ম এবং অভ্যাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। প্রায়শই আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস এবং কর্মকাণ্ড আমাদের ঘরে শুভ বা অশুভের আগমন ঘটায়। বাস্তুশাস্ত্র এবং জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস করা হয় যে আমাদের কর্ম এবং আচরণ আমাদের জীবনের দিক নির্ধারণ করে। এমন পরিস্থিতিতে, ঘরে নেতিবাচক শক্তি এবং অশুভ বিষয় দূরে ভাগিয়ে, আমাদের ঘরকে পবিত্র এবং ইতিবাচক করার জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি!
ঘরে নোংরা জুতো আনা
বাইরে থেকে নোংরা জুতা-চপ্পল পরে সরাসরি ঘরে প্রবেশ করলে ঘরে অপবিত্রতা এবং নেতিবাচকতা ছড়িয়ে পড়ে। ঘরে প্রবেশের আগে জুতা এবং চপ্পল খুলে ফেলতে হবে যাতে ঘরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে।
নোংরা কাপড় রাখা
নোংরা কাপড় দীর্ঘক্ষণ জমে রাখলে ঘরের পরিবেশ দূষিত হয়। এতে ঘরে নেতিবাচক শক্তি তৈরি হয় এবং মানসিক অস্থিরতাও দেখা দিতে পারে।
নোংরা বাথরুম
যদি বাথরুমে ময়লা থাকে এবং সেখানে জল জমে থাকে, তাহলে তা নেতিবাচক শক্তিকে আকর্ষণ করে। নিয়মিত বাথরুম পরিষ্কার রাখুন এবং জলের যথাযথ ব্যবস্থা করুন।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বস্তু
ঘরে বই, কলম বা অন্যান্য জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এটি কেবল ঘরের পরিবেশ দূষিত করে না, বরং মানসিক চাপও তৈরি করে।
উপাসনালয়ের প্রতি অবহেলা
যদি ঘরের উপাসনালয়টি নোংরা বা অবহেলিত থাকে, তাহলে সেখানে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ কমে যায়। ঘরে ইতিবাচকতা বজায় রাখার জন্য উপাসনালয় পরিষ্কার ও পবিত্র রাখুন।
অশ্লীলতার সঙ্গে সম্পর্কিত অভ্যাস
আমিষ খাবার, মদ্যপান, অশ্লীল ভাষা বা মানুষের মধ্যে ঝগড়ার মতো অভ্যাস ঘরে অশুভ পরিবেশ সৃষ্টি করে। এগুলো ঘরের পরিবেশে নেতিবাচকতা ছড়ায় এবং মানসিক শান্তিকেও প্রভাবিত করে।
খারাপ খাদ্যাভ্যাস
যদি আপনি কখনও ডাইনিং টেবিলে, কখনও বিছানায়, কখনও পড়ার টেবিলে খান, তাহলে এই অভ্যাসটিও ঘরে অশুভের কারণ হয়। খাবার সবসময় এক জায়গায় সুশৃঙ্খলভাবে খাওয়া উচিত।
নিরামিষ এবং আমিষ খাবারের মিশ্রণ
একই পাত্রে আমিষ এবং নিরামিষ খাবার রান্না করা বা খাওয়া রান্নাঘরের পবিত্রতা লঙ্ঘন করে, যা নেতিবাচক শক্তির সৃষ্টি করতে পারে।
নোংরা বাসনপত্র নয়
খাবার খাওয়ার পর নোংরা বাসনপত্র এখানে-সেখানে রেখে দিলেও নেতিবাচকতা দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে ধুয়ে একপাশে রেখে দিন, যাতে ঘর পরিষ্কার থাকে।
খাদ্য অপচয়
খাবার নষ্ট করা বা ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া একটি বড় অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। এর ফলে দারিদ্র্য দেখা দেয় এবং বাড়িতে আর্থিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
খারাপ আচরণের অভ্যাস
ঘরে চিৎকার করা বা জোরে কথা বলা শান্তি বিঘ্নিত করে। এটি বাড়িতে একটি চাপপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে পারে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রবীণদের অপমান করা
বড়দের অপমান বা খারাপ ব্যবহার করলে ঘরে দুর্ভাগ্য এবং অশান্তি আসে। এটি একটি মহাপাপ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সারা জীবনের জন্য অশুভ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
শিশুদের সঙ্গে খারাপ আচরণ
কোনও কারণ ছাড়া শিশুদের মারধর করা, তাদের সাথে কঠোর আচরণ করা, ঘরে অশুভ এবং নেতিবাচকতা বৃদ্ধি করে। এটি শিশুদের মানসিক শান্তির উপর প্রভাব ফেলে এবং পরিবারে উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করে।
কোন কোন ভালো অভ্যাস ঘরে ইতিবাচক শক্তি নিয়ে আসে
- প্রতিদিন পুজো করুন: প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় কিছু সময় উপাসনা করতে ভুলবেন না। প্রদীপ এবং ধূপ জ্বালান এবং প্রভুর আশীর্বাদ প্রার্থনা করুন এবং ঘরে ইতিবাচক শক্তি ছড়িয়ে দিন।
- ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করা: ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে মনোযোগ দিন, বিশেষ করে রান্নাঘর এবং উপাসনালয়ের পবিত্রতা বজায় রাখুন। একটি পরিষ্কার ঘর ইতিবাচক শক্তির উৎস।
- জলের অপচয় এড়িয়ে চলুন: জল অপচয় করবেন না, কারণ এটি কেবল সম্পদের ক্ষয়ই ঘটায় না বরং এটি ঘরে নেতিবাচক শক্তির সৃষ্টি করতে পারে।
- মিষ্টি এবং ভদ্র ভাষায় কথা বলুন: বাড়িতে সর্বদা ভদ্র এবং মিষ্টি ভাষা ব্যবহার করুন। এতে পরিবারে সম্প্রীতি ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং ঘরের পরিবেশ ইতিবাচক থাকে।
ডিসক্লেইমার: বিশ্বাস ও সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে এই খবর।