আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের পর্দাফাঁস করল কলকাতার নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। ডার্ক-নেট ওয়েব প্ল্যাটফর্মে আমেরিকা-কানাডায় মাদকের অর্ডার দেওয়া হত। তারপর সেগুলো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কলকাতায় পাচার করা হচ্ছিল। এইভাবেই শহরে কোটি কোটি টাকার বিদেশি মাদক পাচারের কারবার রমরমিয়ে চলছিল।শনিবার ঘটনায় জড়িত দুই যুবতী-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে নার্কোটিক কন্ট্রোল ব্যুরোর তদন্তকারী আধিকারিকরা। এনসিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাচার করা হচ্ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামী ও শক্তিশালী সবুজ গাঁজা (মারিজুয়ানা)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে বিপুল পরিমাণে এই মাদক চোরাচালান করা হচ্ছিল। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শনিবার কলকাতার একটি কুরিয়ার সার্ভিসের দফতরে হানা দিয়ে সেখান থেকে ৪২টি বিদেশি পার্সেলে মোট ২০ কেজি মাদক বাজেয়াপ্ত করেছে তাঁরা। মাদক চোরাচালানের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনসিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম শ্রদ্ধা সুরানা (২৫), তারিনা ভটনাগর (২৬) ও করণকুমার গুপ্তা(৩০)।গোপন সূত্রে তদন্তকারীরা খবর পান, বিপুল পরিমাণে উচ্চমানের মাদক দ্রব্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিদেশ থেকে কলকাতায় পাচার করা হচ্ছে। একটা বড় কনসাইনমেন্ট আমেরিকা ও কানাডা থেকে রাজ্যে ঢুকেছে। কিছুদিন ধরেই এনসিবির তদন্তকারীরা কলকাতার ওই কুরিয়ার পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার উপর নজর রাখছিল।গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ২৭ জুলাই ও ৩০ জুলাই কলকাতার ফরেন পোস্ট অফিস (এফপিও) তে প্রসাধনী, খেলনা ও গেমের নামে ৪২টি বিদেশি ভুয়ো পার্সেল ঢুকেছে। শনিবার সেখানে হানা দিয়ে সমস্ত পার্সেলগুলো বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘এই গাঁজা বিশ্বের সবচেয়ে দামী ও শক্তিশালী প্রজাতির গাঁজা। আমাদের দেশে এই ধরনের গাঁজা পাওয়া যায় না। এই গাঁজায় ১৯ থেকে ২৫ শতাংশ টিসিএইচ-এর (গাঁজার প্রধান সাইকোঅ্যাক্টিভ যৌগ) পরিমাণ রয়েছে।’কীভাবে বিদেশ থেকে এই গাঁজা পাচার করা হচ্ছিল? এই প্রসঙ্গে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতরা জেরায় স্বীকার করেছে তারা এই মাদকের প্যাকেট অর্ডার করার জন্য একটি ডার্ক-নেট ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছে। যাতে মাদক আইন এনফোর্সমেন্ট ফিল্ড আধিকারিক (ডিএলইও)’র হাতে ধরা না-পড়ে, সেজন্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সেগুলো পাচার করা হচ্ছিল।