জ্বর নিয়ে রোগীকে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। অথচ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর দেখা দেয় অন্য সমস্যা। রোগীর শ্বাসযন্ত্রে দুরারোগ্য সংক্রমণ হয়েছিল হাসপাতালে। তার জেরে মৃত্যু হয়েছিল রোগীর। সেই সং🐼ক্রান্ত মামলায় হাসপাতালের গাফিলতি খুঁজে পাওয়ায় কর্তৃপক্ষকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। একই সঙ্গে মামলাকারীকে চিকিৎসা খরচ বাবদ ২ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা ফেরাতে হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাওড়ার আন্দুলের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে এমনই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি মনজিৎ মণ্ডল এবং দুই সদস্য সমীক্ষা ভট্টাচার্য ও শ্যামল কুমারের বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: সন্তান প্রসবের পর মহিলার মৃত্যু, নার্সিংহোমক🧔ে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূর🏅ণের নির্দেশ
মামলার বয়ান অনুযায়ী, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিܫলেন মৃত রোগীর স্ত্রী চন্দ্রা পাল। তিনি হাওড়ার ব্যাঁটরার নরসিংহ দত্ত রোডের বাসিন্দা। ২০১৩ সালের ৩০ মে স্বামী সোমেন্দ্রনাথ পালকে জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন চন্দ্রা। হাসপাতালের চিকিৎসক সঞ্জয় কুমার সাহার অধীনে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। প্রথমে চিকিৎসক জানান, তিনি সিওপিডিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সেই মতো তাকে নন ইনভেসিভ আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, সেখানে তাঁ𝓀র শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাতে রোগীর রক্ত পরীক্ষা থেকে শুরু করে এক্সরেও করা হয়। দেখা যায় ফুসফুসে প্যাচ রয়েছে। এরপর শ্বাসকষ্ট থাকায় মুখের মধ্য দিয়ে গলায় নল প্রবেশ করিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয় রোগীর। তাঁকে মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে সাপোর্ট দেওয়া হয়। এরপর জানা যায় রোগীর ফুসফুসে ভয়ঙ্কর সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যার নাম হলো 'ন্যাসোকোমিয়াল ইনফেকশন’। চিকিৎসকদের বক্তব্য, সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই এই ধরনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সোমেন্দ্র বাবুর অবস্থার অবনতি হতে থাকায় শেষে ওই বছরের ৬ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়।
চন্দ্রার অভিযোগ, তার আগের দিন তিনি স্বামীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেখতে পান তাঁর স্বামী হাঁপাচ্ছিলেন। তাঁর মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছিল। তখন তিনি নার্সদের অনেক ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কেউ আসেননি বলে অভিꦿযোগ। তিনি আরও অভিযোগ করেছিলেন, তাকে না জানিয়ে মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছিল।
এরপর ২০১৫ সালে তিনি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন। ২৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি মামলা করেছিলেন। তবে চিকিৎসক সঞ্জয় কুমার সাহা শুনানিতে হাজির না হওয়ায় তাঁকে ২০ হাজার টাকা মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে তিনি অবশ্য টাকা মিটিয়ে দেন। কিন্তু, রোগীর শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণের ফলেই যে মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়টি প্রমাণিত হয় আদালতে। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ না মেটালে মোট অঙ্কের উপর বার্ষিক ১০ শতাংশ হারে সু🅠দ দিতে হবে বলে নির্দেশ আদালতের। এছাড়া মামলা খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা রো꧅গীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।