২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে ন্যানো কারখানা তৈরির কাজ শুরু করেছিল টাটা। তবে শেষ পর্যন্ত 'অনিচ্ছুক কৃষক' এবং তৃণমূলের আন্দোলনের জেরে রাজ্য ছাড়তে হয় টাটাদের। যদিও ততদিনে ন্যানো কারখানার অনেকখানি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পরে ২০১৬ সালে সুপ্রিম নির্দেশিকার পরে ন্যানোর জমি কৃষকদের ফেরাতে শুরু করে রাজ্য সরকার। ভেঙে ফেলা হয় টাটার অর্ধনির্মিত কারখানা। ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে সেই 'টাটার মাঠে' আর ন্যানো কারখানার কোনও ইট দেখা যায় না। তবে মাটি খুঁড়লে আজও বহু জায়গা থেকে বেরিয়ে আসে কনক্রিট। এদিকে বাংলা ছেড়ে টাটা পাড়ি দিয়েছিল গুজরাটে। মোদী রাজ্যের সানন্দে তৈরি হয়েছিল ন্যানোর কারখানা। ২০০৯ সালে সেখান থেকে উৎপাদন শুরু হয় ১ লাখ টাকা দামের গাড়ির। মধ্যবিত্ত ভারতীয়কে 'গাড়ির মালিক' করার স্বপ্ন পূরণ করতেই এই গাড়ি বাজারে এনেছিলেন রতন টাটা। তবে পরবর্তীতে সেই গাড়ির চাহিদা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। (আরও পড়ুন: সিঙ্গুরনামা: 'মানুষের বাড়ি ভেঙে কলকাতায় মꦇেট্রো হয়, আ💞র এখানে হয় আন্দোলন')
আরও পড়ুন: সিঙ্গুরনামা:𝐆 টাটা গিয়েছিল সানন্দে, গুজরাটের সেই জায়গার আজ কী হাল?
আরও পড়ুন: সিঙ্গুরনামা: NH2 দিꩵয়ে ছুটবে স্বপ্ন? 'টাটাহীন' সিঙ্গুর তাকিয়ে NHAI'র কাজের দিকে
এই আবহে উৎপাদন শুরুর একযুগ হতে না হতেই, ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল টাটা ন্যানোর উৎপাদন ও বিক্রি। তবে এই ন্যানোর হাত ধরেই গুজরাটের শিল্প ভাগ্য অনেকটাই বদলে গিয়েছে। বিগত বছরগুলিতে বহু বড় বড় সংস্থা সেখানে তাদের প্রকল্প চালু করেছে। যে মোদীর নামের সঙ্গে গুজরাট দাঙ্গার কলঙ্গের দাগ লেগেছিল, সেই মোদী হয়ে উঠেছিলেন শিল্পবান্ধব 'মুখ'। সেই ভাবমূর্তিকে হাতিয়ার করেই গুজরাট থেকে দিল্লি আসতে পেরেছেন মোদী। অপরদিকে টাটার বিদায়কে কাজ লাগিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে উঠতে পেরেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তবে বাণিজ্যিক দিক দিয়ে ন্যানো বিদায়ের পর সিঙ্গুরে আর কোনও শিল্প হয়নি। এদিকে গুজরাটে ন্যানোর উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পরেও সেখানে উন্নয়নের ধারা বন্ধ হয়নি। (আরও পড়ুন: হাওড়া থেকে চালু নয়া 🎃স্পেশাল ট্রেন, কতক্ষণে NJP পৌঁছে দেবে বন্দে 🐓ভারতের 'বদলি'?)
আরও পড়ুন: '…ভাতা দেওয়া যাবে না', বড় রা♔য় সুপ্রিম কোর্টের, সরকারি কর্মীদে🐈র মাথায় পড়বে হাত
আরও পড়ুন: 'আদালতের নির্দেশ না মেনে' মে'র বেতন কাটা যাবে সরকারি শিক্ষকদের! জারি বিজ্ঞপ🧔🅠্তি
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেই গুজরাট সরকারের সঙ্গে কোকাকোলার চুক্তি হয়েছে। সানন্দে তাদের ৩০০০ কোটি টাকার ইউনিট তৈরির প্রকল্পের জন্য জমি পাবে কোকাকোলা। ন্যানোর চাকা হয়ত আর গড়ায় না। তবে সানন্দে উন্নয়নের ধারা বন্ধ হয়নি। এদিকে শুধু কোকাকোলা নয়, সানন্দ আগামী কয়েক বছরে 'সেমিকন্ডাক্টর চিপ' তৈরির হাব হতে পারে ভারতের। সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর বানাতে ২০২৩ সালের জুন মাসে গুজরাটের সরকারের সঙ্গে মিলে কেন্দ্র চুক্তি করেছিল মাইক্রনের সঙ্গে। এই বহুজাতিক সংস্থা সানন্দে তাদের কারখানা থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন শুরু করে দিতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তাই ন্যানোর চাকা থমকে গেলেও সানন্দের হাত ধরে ভারতে নয়া 'ডিজিটাল বিপ্লব' ঘটতে পারে। (আরও পড়ুন: শিয়ালদা শাখার লোক🌟াল ট্রেন যাত্রীদের 'অপেক্ষা' বাড়ল, বড় সিদ্ধান্ত নিল রেল)
আরও পড়ুন: এবার হাওড়া থেকে সাঁতর🦩াগাছি রুটে চালু হবে মেট্রো? সামনে এল বড় 'পরিকল্পনা'
আর লোকসভা ভোটের আবহে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তারা সরকারে এলে সিঙ্গুরে শিল্প আনবেন। সিঙ্গুরবাসীর মনে তা নিয়ে আশা তো আছে। তবে সেই অর্থে 'ভরসা' নেই। সিঙ্গুরে ঘুরে ঘুরে অনেকের মুখেই শোনা গিয়েছে, 'এখন যা হওয়ার হবে। কৃষি হলে হবে, শিল্প হলে হবে।' তবে এরপরে কি টাটা এলে ফের আন্দোলন হবে সিঙ্গুরে? ২০০৬ সালে আন্দোলন করা এক ব্যক্তি এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'আমরাও চাই শিল্প হোক। টাটাকে তাড়াতে চাইনি।🌞 আমরাও জেদ ধরে বসেছিলাম। ত♒ারাও কিছুটা পিছু হটেনি। তবে এখন কারখানা হলে হবে।'