দিব্যি জীবিত আছেন। আর সেই জীবিত অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট-হিংসায় 'মৃত' বানিয়ে দিল বিজেপি। তবে ঠিক তাঁকেই নয়, কারণ মৃতের তালিকায় শুধু অভ্রের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। নাম পালটে হয়েছে - মানিক মৈত্র।বাংলায় ভোট-হিংসার ছবি তুলে ধরতে গিয়ে এমনই বিপত্তি ঘটাল বিজেপি। ইতিমধ্যে নাম না করে যে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য ভুয়ো ছবি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অবশ্য দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে বিজেপির তরফে সাফাই দেওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, ভুলবশত অভ্রের ছবি ভিডিয়োয় ব্যবহার করা হয়েছে।বিষয়টা ঠিক কী হয়েছিল? ইন্ডিয়া টু'তে একটি সাক্ষাৎকারে পেশায় সাংবাদিক অভ্র জানিয়েছেন, বুধবার রাতের শিফটের পর বৃহস্পতিবার সকালে ১০ টা নাগাদ ঘুম থেকে ওঠেন। উঠেই দেখেন যে ফোনে কমপক্ষে ১০০ টি মিসড কল এবং অসংখ্য হোয়্যাটসঅ্যাপ মেসেজ। এক বন্ধুর মেসেজ পড়ে জানতে পারেন, শীতলকুচিতে ভোট-পরবর্তী হিংসায় মৃত হিসেবে তাঁর ছবি ব্যবহার করেছে বঙ্গ বিজেপি। তারপর নিজেও সেই ভিডিয়ো দেখেন অভ্র। যিনি ইন্ডিয়া টু'তে কর্মরত এবং কাজের সূত্রেই শীতলকুচি থেকে প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার দূরে দিল্লিতে থাকছেন।সেই ভিডিয়ো দেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন অভ্র। ফেসবুক পোস্টে বলেন, 'আমি অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে সুস্থ-সবলভাবে শীতলকুচি থেকে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূরে আছি। বিজেপির আইটি সেল এখন দাবি করছে যে আমি নাকি মানিক মৈত্র এবং শীতলকুচিতে মারা গিয়েছি। এই ধরনের ভুয়ো খবরে বিশ্বাস করবেন না। দয়া করে উদ্বিগ্ন হবেন না। আমি আবারও বলছি, আমি (এখনও) বেঁচে আছি।' টুইটারেও একইরকম পোস্ট করেন অভ্র। ভাইরাল হয়ে যায় তাঁর পোস্ট। কয়েকঘণ্টা পর বিজেপির তরফে সাফাই দেওয়া হয় যে ভুলবশত অভ্রের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর লেখা একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভিডিয়ো (যদিও প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত বিজেপির ইউটিউব অ্যাকাউন্টে আছে সেই ভিডিয়ো) বানাতে গিয়ে সেই বিপত্তি হয়েছে। সত্যিই নাকি মানিক মৈত্র মারা গিয়েছেন। সেই সঙ্গে একটি ছবিও পোস্ট করা হয়েছে। সেই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি ‘হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা’। যদিও বিজেপির সেই সাফাইয়ের অভ্রের পালটা প্রশ্ন, যদি এই ভিডিয়োয় 'ভোট-পরবর্তী হিংসায়' মৃত ব্যক্তির পরিবর্তে তাঁকে কোনও খুন বা ধর্ষণের মতো ঘটনায় তাঁর ছবি ব্যবহার করা হত, তাহলে তাঁকে কীরকম অবস্থার মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হত? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি বিজেপির তরফে।