প্রায় নয় বছর আগের কথা। একটি কার্টুন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছিল। নিশ্চয়ই মনে পড়ছে। যার জেরে তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্য–রাজনীতি। সালটা ২০১২। আর কার্টুনটা ছিল—‘দুষ্টু লোক? ভ্যানিশ’। এবার নিশ্চয়ই পুরো বিষয়টা স্মৃতিতে নাড়া দিয়ে উঠেছে। আর এই কার্টুন কাণ্ডের জন্য অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে জেলের দরজা পর্যন্ত দেখতে হয়েছিল। কিন্তু আজও এই কার্টুনটি সমান প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে রাজনীতির অলিন্দে। কারণ 'দমবন্ধ' হয়ে যাচ্ছে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী পদত্যাগ করেছেন।আর সেই কার্টুন ‘দুষ্টু লোক? ভ্যানিশ’। এই কার্টুনটি তৈরি করার অভিযোগে প্রথমে নিগ্রহ নেমে এসেছিল এই অধ্যাপকের উপর। তারপর গ্রেফতার এবং অবশেষে জেলে রাত কাটাতে হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে। এখানেই শেষ নয়, আজও সে মামলা রয়েছে তাঁর উপরে। তাই আদালতে হাজিরা দিতে হয় তাঁকে। সেদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছিলেন, কার্টুনে ‘ভ্যানিশ’ কথাটি লিখে আসলে তাঁকে মেরে ফেলার বার্তা ছড়ানো হচ্ছেে৷ গোটা বিষয়টিকে সাইবার ক্রাইম বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি৷এরপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। কার্টুনে থাকা চরিত্রে মুকুল রায় এখন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি। তৃণমূল কংগ্রেস এখন তাঁর কাছে অতীত দল। আর দীনেশ ত্রিবেদী 'অক্সিজেন' নিতে দল ছেড়েছেন। ছেড়েছেন রাজ্যসভার সদস্যপদও। কিন্তু সেই কার্টুন ফরোয়ার্ড করে জেলে যাওয়া অম্বিকেশ মহাপাত্রের মামলা এখনও চলছে।তাই ক্ষোভের সঙ্গে অধ্যাপক বলেন, ‘যে তিনটে মুখ তার একজন বিজেপিতে। একজন সংসদে দাঁড়িয়ে ইস্তফা দিয়েছেন। আমি জানতে চাই এই পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন কি ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছে? এখনও আমাকে এই মামলায় হাজিরা দিতে হয়। রাজ্য সরকারের অবস্থানটা কী জানতে চাই।’ এই বিষয়ে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘খুব খারাপ হয়েছে। ওনার কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। আর মামলাও প্রত্যাহার করা উচিত।’ তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ ছেড়ে চলে গেলে মামলা উঠে যায় নাকি? যিনি অপরাধ করেছেন তাঁর মামলা থাকে। আইন আইনের পথে চলবে।’ তাই বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সেই ন'বছর আগের কার্টুন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।