মাসখানেক আগেই ‘অন্তরাত্মার’ ডাক শোনার কথা জানিয়েছিলেন। তারপর নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে বিজেপিতে যোগ দিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে তাঁর হাতে দলের সদস্যপদ তুলে দেন সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা।আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পর দীনেশ বলেন, ‘বিজেপিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এই সোনার সময়ের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’ সঙ্গে জানান, একটি পরিবার হল রাজনৈতিক পরিবার, অপরটি জনতার পরিবার। তিনি আজ জনতার পরিবারের যোগদান করলেন বলে দাবি করেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ। সেই মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে তোপ দাগতে ছাড়েননি দীনেশ। বলেন, 'ওই পার্টিতে একটি পরিবারের সেবা করা হয়। যে দলের নাম করতে চাইছে না আমি। আপনারা সবাই জানেন। আমি কোনওদিন নিজের বিচারধারা ভেঙে এগিয়ে যায়নি। আমার কাছ দেশ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।'তাহলে কি বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ে করবেন? দীনেশ বলেন, ‘আমি ভোট দাঁড়াই অথবা না দাঁড়াই, আমি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয় থাকব। তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রত্যাখান করেছেন বাংলার মানুষ। তাঁরা হিংসা বা দুর্নীতি নয়, উন্নয়ন চান। তাঁরা প্রকৃত পরিবর্তনের জন্য তৈরি। রাজনীতি খেলা নয়, এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খেলতে গিয়ে তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নিজের মতাদর্শ ভুলে গিয়েছেন।’‘অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ’ দীনেশের আগে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন নড্ডা। তৃণমূলের লাগাতার ‘ওয়াশিং মেশিন’ কটাক্ষের আবহেই নড্ডা বলেন, ‘এতদিন ভালো মানুষ বাজে দলে ছিলেন। সেটা উনিও অনুভব করতাম। এবার সঠিক ব্যক্তি সঠিক দলে যোগ দিলেন।’ রাজ্যসভার পদ ছেড়ে দিয়ে দীনেশ বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় নড্ডা বলেন, ‘সুবিধাবাদের উর্ধ্বে উঠে আদর্শবাদের পথে হেঁটেছেন। কোনও স্বার্থ নেই।’গত মাসে রাজ্যসভায় নাটকীয় পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে ছেড়েছিলেন তৃণমূলও। ‘দ্য হিন্দু'-তে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্যসভার মতো ‘পবিত্র’ জায়গায় বসেও মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলেন না। দীনেশের কথায়, ‘আমি ভীষ্ম পিতামহের মতো হতে চাইনি। হিংসা এবং অন্যায়ের সময়ও কোনও শব্দোচ্চারণ না করার জন্য তাঁকে মহাভারতে দোষারোপ করা হয়। দলে দুর্নীতি এবং বাংলার রাস্তায় হিংসার সময় আমি চুপ করে থাকতে পারি না। যখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা চালানো হল, তখন আমি দলের মধ্যে সমালোচনার মধ্যে পড়েছিলাম। কারণ আমি হিংসার পক্ষে দাঁড়ায়নি। প্রতিদিন আমায় বলা হত যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গালিগালাজ করতে বলা হত। কিন্তু সেটা আমার মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না। যদি প্রধানমন্ত্রী ভালো কিছু করেন, অবশ্যই আমাদের তা প্রশংসা করতে হবে। যদি সরকার কিছু ভুল করে, তাহলে অবশ্যই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে এবং সৌজন্যবোধ বজায় রেখে বলিষ্ঠভাবে বিরোধিতা করতে হবে।’