ভারত-পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান গত কয়েক বছর ধরে পুরোপুরি বন্ধ। তবে একটা সময় পাকিস্তানি সংগীত শিল্পীরা রাজত্ব করেছেন এদেশে সংগীত দুনিয়াতে। সম্পর্কের তার ছিঁড়লেও এখনও পাক গায়কদের জনপ্রিয়তায় একুটুকও ছেদ পরেনি এপারে। এর জেরেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে আচমকা মন খারাপ লক্ষ লক্ষ ভারতীয় সংগীতপ্রেমীর। কারণ ৩৩ বছরের সম্পর্কে ইতি টেনে বিচ্ছেদের ঘোষণা করল পাক রক ব্যান্ড স্ট্রিংস। বিলাল মকসুদ এবং ফয়জল কাপাডিয়া-র এই ব্যান্ড নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে LoC-র দুই পারের অসম্ভব জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। যদিও স্ট্রিংসের পথচলা শুরু অনেক আগে। ১৯৮৮ সালে তৈরি হয়েছিল এই ব্যান্ড। ৩৩ বছর পর ইতি পড়ল তাঁদের সফরে। পেশাদার সম্পর্ক ভাঙলেও বিলাল ও ফয়জল আগের মতোই বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখবেন ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তেমনটাই জানিয়েছে এই ব্যান্ডের অফিসিয়্যাল পেজ। সেখানে যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা জানান, ‘আজকের পোস্টরা অন্য দিনগুলোর চেয়ে একটু অন্যরকম বন্ধুরা। আজ, ২৫.০৩.২০২১ তারিখে আমরা স্ট্রিংস-এ ইতি টানলাম। গত ৩৩টা বছর দুর্দান্ত ছিল আমাদের দুজনের জন্য, জীবনে খুব কমই এমন ধরণের কাজ করবার সুযোগ আসে, আর সবটা সম্ভবপর হয়েছে আমাদের ভক্তদের জন্য। আশা করছি তোমরাও আমাদের কাজটা সার্থক বলে মনে কর’। সবশেষে তাঁরা জানান, ‘হয়ত টেকনিক্যালি আমাদের ব্যান্ডটা একসঙ্গে থাকবে না, তবে আমরা দুজনে অসাধারণ একটা সম্পর্ক ভাগ করি, যা অবিচ্ছেদ্য… তাই জীবন আমাদের যে পথেই নিয়ে যাক সেই সম্পর্কের সুতোটা জোড়া থাকবে। ধন্যবাদ সকলকে… সবকিছুর জন্য’। স্ট্রিংস-এর এই পোস্টে গোটা বিশ্বের সংগীতপ্রেমীদের হৃদয় নিংড়ানো মেসেজ উপচে পড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে মন খারাপের রেশ। সেখানে পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারতীয়দের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। অনেকেই আশা করছেন, বরাবরের পছন্দের জুটির আলাদা হওয়াটা মন থেকে মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ১৯৮৮ সালে চার কলেজ পড়ুয়ার হাত ধরে সফর শুরু স্ট্রিংসের। ফয়জল-বিলাল ছাড়াও এই ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন রফিক উজির আলি এবং করিম বশির ভয়ে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে নতুন করে জনপ্রিয়তা পায় এই ব্যান্ড। ‘ধানি’, ‘দূর’-এর মতো জনপ্রিয় মিউজিক অ্যালবাম সংগীতপ্রেমীদের উপহার দিয়েছে স্ট্রিংস। বলিউডের ছবির জন্যও ‘ইয়ে হ্যায় মেরি কাহিনি’, ‘আখরি অলভিদা'র মতো গান কম্পোজ করেছে এই পাকিস্তানি রক ব্যান্ড।