ঋণ শোধ করতে পারলেই আপনি একজন স্বাধীন মানুষ। কিন্তু এই জীবনে ঋণ ঠিক কত রকমের হয়? শুধু কি আর্থিক ঋণের বোঝাটুকুই থাকে মানুষের, নাকি জীবনপথে চলতে চলতে এর বাইরেও অন্য কোনও ঋণের বাঁধনে জড়িয়ে পড়ি আমরা! যে ঋণের বোঝা আর্থিক ঋণের চেয়ে বেশি ভারি, যে ঋণ একান্ত মানসিক, যে ঋণ শুধু গ্রহীতাকে নয়, দাতাকেও প্রভাবিত করে সামনভাবে- সেই জটিল মনস্তত্ত্বের গল্পই উঠে আসবে ‘ময়ূরাক্ষী’ পরিচালক অতনু ঘোষের নতুন ছবি ‘শেষ পাতা’য়।‘ময়ূরাক্ষী’, ‘রবিবার’-এর পর অতনু ঘোষের এই ছবিতেও মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।এই হ্যাট্রিক নিয়ে পরিচালকের জানালেন, ‘আমাদের মধ্যে একটা দুর্দান্ত বন্ডিং আছে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা আর বিশ্বাসের সম্পর্ক রয়েছে। একজন পরিচালক-অভিনেতার সম্পর্কে সেটা খুব জরুরি। একটা ছবি শেষ হলে বুম্বাদা আমার সঙ্গে ফের কাজ করতে চায়, সেটাই তো বড় পাওনা। সবসময় সব অভিনেতার সঙ্গে কাজ শেষের পর তেমনটা হয় না’। প্রসেনজিৎ কী বলছেন শেষ পাতা নিয়ে? অভিনেতার বক্তব্য, ‘অতনুর স্টোরি টেলিং অন্য রকমের। এই গল্পে আমি বাল্মীকি নামে এক লেখকের চরিত্রে, যার এক সময়ে বেশ নামডাক ছিল। কিন্তু তার জীবনেও অনেক ঘটনা ঘটে যায়.. আপতত এর চেয়ে বেশি বলা যাবে না। কিন্তু এইটুকু যোগ করব এমন চরিত্রে আমি আগে কখনও অভিনয় করিনি’। কেমন হবে শেষ পাতার গল্প? অতনু ঘোষের কথায়, চার জন মানুষ'কে নিয়ে এগোয় এই ছবি কাহিনি। আশি ও নব্বইয়ের দশকে ব্যাপক জনপ্রিয় নাকউঁচু লেখক বাল্মীকি (প্রসেনজিৎ), কিন্তু জীবনের ঘনঘটায় অনেক কিছু ঘটে যায় তার জীবনে, এখন তাঁর জীবনটা একাকীত্বে ভরপুর। অন্যদিকে রয়েছে ত্রিশের কোঠার ঝকঝকে একটা ছেলে সৌনক, ডিজিট্যাল জমানার সঙ্গে এঁটে উঠতে না পারায় একসময় টলিগঞ্জে কালারিস্ট হিসাবে কাজ করা সৌনকের বাবা এখন কাজ হারিয়ে বাড়িতে বসে, পরিবারে ছোট ভাই রয়েছে- তাই ওঁর মাথায় অনেক দায়িত্ব। জীবনে স্থির করা লক্ষ্যে ওকে পৌঁছাতেই হবে না হলে…এই চরিত্রে রয়েছে বিক্রম। অন্যদিকে মেধার ভূমিকায় দেখা যাবে গার্গী রায়চৌধুরীকে। মাঝবয়সী সংবেদনশীল এবং বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন এক মহিলা মেধা, কিন্তু আচমকা ওর জীবনের গতিপ্রকৃতি বদলে দেবে এক ঘটনা। সেটা অতিক্রম করে কীভাবে নিজের জীবনে স্থিরতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে সে, সেই লড়াই ফুটে উঠবে পর্দায়। আর থাকছে দীপা, একজন চিত্রশিল্পী- বছর সাতেক ধরে বিক্রমের সঙ্গে প্রেম সম্পর্কে আবদ্ধ। যে নিজের অস্তিত্ব আর সম্মান টিকিয়ে রাখবার লড়াই চালাচ্ছে। দীপার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে নাট্যমঞ্চের পরিচিত মুখ রায়তী ভট্টাচার্যকে'।কীভাবে এই চারজনের যাত্রাপথ মিলে যাবে, নিজের স্বপ্ন অথবা বেঁচে থাকবার লড়াইয়ে তাঁরা কীভাবে একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠবে তাই উঠে আসবে ‘শেষ পাতা’য়।পরিচালক জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হবে ‘শেষ পাতা’র শুটিং। কলকাতা, শ্রীরামপুর, শান্তিপুর জুড়ে চলবে শ্যুটিং পর্ব। এখনও লোকেশন রেকি পর্ব চলছে। করোনা অতিমারির মধ্যে খুব বুঝেশুনে এগোতে হবে তা ভালোভাবেই জানেন পরিচালক ও প্রযোজক। শেষ পাতা প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছে ফিরদৌসুল হাসানের ‘ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন’।