ꦬ যোগী রাজ্যের সেই চিকিৎসক কাফিল খানকে মনে আছে? নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে এনে অনেক মরণাপন্ন শিশুর প্রাণ বাঁচিয়ে সকলের কাছে হিরো হয়ে উঠেছিলেন বাবা রাঘবদাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কাফিল খান। কিন্তু প্রসাশন, ২০১৭ সালে গোরক্ষপুরের হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ৬৩ জন শিশুর ও ১৭ জন সাবালকের মৃত্যুর দায়ে জেলে পাঠিয়েছিল কাফিল খানকে। চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় তাঁকে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণেই হেনস্থা করা হয় কাফিল খানকে। কাট টু ২০২৩। দেশ জুড়ে এখন ‘জওয়ান’ জামানা।
✃শাহরুখের এই ছবিতে উঠে এসেছে একাধিক জ্বলন্ত সামাজিক ইস্যু। যার অন্যতম কৃষকদের আত্মহত্যা, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা, সরকারের দুর্নীতির জেরে ঘটা শিশুমৃত্যু! সিনেমার প্লটে সরকারি হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর যে হাড়হিম করা ঘটনা উঠে এসেছে তার মধ্যে অনেকেই ছায়া খুঁজ পেয়েছেন ২০১৭ সালে গোরক্ষপুরের মর্মান্তিক শিশুমৃত্যুর (Gorakhpur Tragedy)। ছবিতে সানিয়া মালহোত্রা অভিনীত ডাঃ ইরাম চরিত্রে মধ্যে অনেকেই ডাঃ কাফিল খানের ছায়া খুঁজে পেয়েছেন। রিল আর রিয়েল যেন কোথাউ গিয়ে মিলেমিশে একাকার!
🥃হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরিয়েছে! উর্ধতন আধিকারিকদের বারবার জানিয়েও ফল হয়নি। এরপর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ইরাম নিজের টাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তত ক্ষণে শ্বাস থেমেছে অসুস্থ শিশুদের। এরপর চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ আনা হয় ইরামের বিরুদ্ধে, জেলে যেতে হয় তাঁকে। হুবহু একই ঘটনা। ইরামের চরিত্রের অনুপ্রেরণা কি কাফিল খান? সানিয়া ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন- ‘এই ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। সেটে অভিনেতা হিসাবে আমি পরিচালকের কাছে পূর্ণ সমপর্ণ করেছি। অ্যাটলি স্যারের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই ইরামকে দেখেছি। তবে আমি শুনলাম উনি (কাফিল খান) এই নিয়ে টুইট করেছেন। আমি এইটুকুই বলব, ইরামের মতো একটা চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে আমি গর্বিত। আমরা একটা জরুরি বার্তা সমাজকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি’।
🐻‘জওয়ান’ মুক্তির কয়েকঘন্টা পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কাফিল খান ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন শাহরুখ-সহ গোটা জওয়ান টিমকে। তিনি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন- ‘আমি এখনও ‘জওয়ান’ ছবিটা দেখিনি। তাই ছবি নিয়ে আমার বেশি কিছু বলা উচিত হবে না। অনেকেই আমায় ফোন করে এবং মেসেজ করে ছবির একটি বিশেষ দৃশ্যের কথা জানাচ্ছেন। তবে আমার মনে হয়, সিনেমার সঙ্গে বাস্তব জীবনের অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই ছবিতে অপরাধী শাস্তি পেয়েছেন। বাস্তবে কিন্তু এখনও আমি এবং ওই শিশুদের পরিবার ন্যায়বিচারের জন্য এক দরজা থেকে অন্য দরজায় ঘুরছি। তবে ছবির মাধ্যমের এই গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বার্তাটি দেওয়ার জন্য অ্যাটলি এবং শাহরুখকে অনেক ধন্যবাদ।’
🦂হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনা শ্যুট করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল মেনে নেন সানিয়া। বাস্তবেই সেই করুণ পরিস্থিতির সাক্ষী তিনি, মনে হচ্ছিল সানিয়ার। অভিনেত্রী বলেন- ‘অনেক দিন সময় লেগেছিল নিজেকে সামলাতে। আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না, কেন আমি ওতোটা বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম, কিন্তু শ্যুট শেষ করার কয়েকদিন পরেও আমি ঘুমোতে পারতাম না। অস্বস্তি কাজ করত।’