কথায় আছে অনুশীলনই মানুষকে নিখুঁত করে তোলে। হাতে-কলমে সেই প্রমাণ পেলেন সঙ্গীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তী। ‘চতুষ্কোণ’ ছবির বসন্ত এসে গেꩵছে গানটি গেয়ে ঝড় তুলেছিলেন লগ্নজিতা। তবে লাইভ শো-তে গায়িকার গান হামেশাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তিনি ‘বেসুরো’ গান, এমন কটাক্ষ কম শোনা যায়নি। লগ্নজিতা নিজেই নিজেকে ‘বেসুরো’ দেগে মনের ঝাঁপি খুললেন।
মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে লম্বা পোস্☂টে তিনি জানান, কেমনভাব🔯ে ছোটবেলা থেকে রেওয়াজ না করার অভ্যাসের জেরে তাঁর সঙ্গীতে খামতি রয়েই গিয়েছে। তিনি লেখেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে কখনও রেওয়াজ করিনি। বাবা, গুরুরা অনেক চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনওভাবে হয়নি। ২০১৪ থেকে পেশাদারভাবে গাইতে শুরু করলাম। তখন একটু রেওয়াজ করতাম, কিন্তু ওই একটু আধটু। ২০১৪-তে ওতো ফেসবুক লাইভের ব্যাপার ছিল না। আসতে আসতে লাইভ, ফ্যানেদের তোলা ভিডিয়ো….এইগুলো শুরু হল সময় যত এগলো। সেগুলো শুনতে শুনতে উপলব্ধি করলাম আমি কী অত্যন্ত খারাপ গাই। হাজার বেসুরো নোটস, অসংখ্য স্ট্যান্ডিং নোটস, টেল ড্রপস, শ্বাস নেওয়ার সমস্যা, আরও কত্ত কী!’
তিনি আরও জানান, ‘আর অবাক হয়ে দেখতাম, আমরা সিনিয়র, জুনিয়র বা কলিগ সবাই কত্ত সুরে গায় আমার থেকে। এই ফ্যাসট্রেশনের জেরে নিজের গানের ভিডিয়ো দেখাই ছেড়ে দিলাম। কেউ চালালেও বিরক্ত হতাম। কারণ বেসুরো (নোট) গুলো আমার কানে ধামসা-মাদলের মতো বাজতো। তবু, অভ্🀅য়াস যায় না মলে। ওতꩵোকিছুর পরেও, নিয়মিত রেওয়াজ শুরু করিনি। দুঃখ করেছি। কিন্তু কাজের কাজটা করিনি।’
করোনার সময় সঙ্গীতচর্চায় মন দেন গায়িকা। লগ্নজিতা লেখেন, 'করোনা আমাকে একটা দরুণ জিনিস দিলো। সেটা হচ্ছে রোজ রেওয়াজ, এই অভ্যাস আমার আজও যায়নি। কিন্তু করোনাকাল থেকে ২-৩ বছর টানা রেওয়াজ করেও যখন আবার নিজের ভিডিয়ো দেখা শুরু করলাম, দেখলাম সেই সেম প্রবলেম। কোনও উন্নতি হয়নি। খুব মুশরে পড়লাম। রোজ রেওয়াজ করলাম, তাতেও হল না? রাগ করে ৬-৭ 𝄹মাস রেওয়াজ ছেড়ে দিলাম।
হঠাৎ একটা শো এলো। ভাবলাম যা হয় হোক, রেওয়াজ আর করব না। অদ্ভূতভাবে আমি সেই প্রথম একটা শো পুরো সুরে গাইলাম। আর বুঝলাম উন্নতিটা নিজের সময়মতো হবে। ৭ মাস পরেও হতে পারে, তিন বছর পরেও হতে পারে। কিন্তু রেওয়াজ ছাড়লে চলবে ন🌱া।'
বাবা-মা'র কাছে এই প্রথম গায়িকা হিসাবে স্বীকৃতি পেলেন লগ্নজিতা। তিনি লেখেন, ‘আজ একটা অনুষ্ঠানে সলিল চৌধুরীর একটা গান গাওয়ার ছিল। বাবা-মাও ছিলেন শ্রোতা হিসাবে। এই প্রথম আমার নিজের ভিডিয়ো তিনবার পরপর শুনলাম। আর অদ্ভূতভাবে একটাও বেসুরো খুঁজে পেলাম না। ২০১৪ থেকে শুরু করেছিলাম, ২০২৪ হয়ে গেল একটা পুরো গান সুরে গাইতে। ১০ বছর। আজ মা-বাবা প্রথমবার আমাকে শিল্পী হিসাবে স্বীকার করলেন। বললেন, আজ তো꧑মার একটাও ভুল হয়নি।’