করোনা সংকটের মধ্যেই বড়সড় ঝক্কি পোহাতে হল ঋতাভরী চক্রবর্তী ও তাঁর পরিবারকে।কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল নায়িকাকে, হয়েছে অস্ত্রোপচারও। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন ঋতাভরী, ফিরেছেন বাড়িতে। এবং অভিনেত্রীর এই যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায়ের কথা ফেসবুকে জানিয়েছেন ঋতাভরীর মা, পরিচালক শতরূপা সান্যাল। সোশ্যাল মিডিয়াতে এমনিতে ভীষণ অ্যাক্টিভ ঋতাভরীর, তবে নিজের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কিছুই জানানি নায়িকা। ঠিক কী হয়েছিল ঋতাভরীর? শতারূপা সন্যাল জানালেন মেয়েকে পেরিঅ্যানাল অ্যাবসেস (মলদ্বার সংলগ্ন স্থানে ফোড়া)-এর জন্য মারাত্মক যন্ত্রণার মুখে পড়তে হয়েছিল। করোনা আবহ আর উপর একটানা দুদিন লকডাউন, সেই সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ঋতাভরী। কিন্তু সেই কঠিন সময়ে চিকিত্সকরা কেমনভাবে দেবদূতের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়ে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে সেই কথা জানিয়েছেন শতরূপা স্যানাল। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে পরিচালক লেখেন-কোভিড ১৯ প্যান্ডেমিকের আতঙ্কে সকলেই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আছি। প্রায় সব হাসপাতালে বেড অমিল, স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা কমে গেছে, সাধারণ অসুখ বিসুখে ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না।এই যখন অবস্থা, হঠাৎ আমার ছোট মেয়ে ঋতাভরী অসুস্থ বোধ করে। উপসর্গ শুনে আমরা ভেবেছিলাম অর্শ। ডাক্তারও ফোনে শুনেই ওষুধ দিলেন তার। কিন্তু ১৯ তারিখে সকাল থেকেই ব্যথা বাড়তে বাড়তে ক্রমেই অসহ্য হয়ে উঠলো সন্ধ্যের পর।সেই রাত যেন আর কাটেনা, এমন ভয়ংকর!পর পর দুদিন লকডাউন (২০-২১)। কোথায় নিয়ে যাব মেয়েকে?সল্টলেকে ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিকে যোগাযোগ করলাম। যোগাযোগ করলাম প্রখ্যাত সার্জন ডা: নিশীথ কর্মকারকে।দেবদূতের মত এই মানুষটি এক মুহুর্ত দেরী না করে সব ব্যবস্থা করলেন। কোভিড টেস্ট না হলে অপারেশন হবেনা, এখন নিয়ম হয়েছে। বিধান নগর স্টেট জেনেরাল হাসপাতালে দু ঘন্টার মধ্যে সেটা করে দিল। সেই দিন বিকেলেই অপারেশন হয়ে গেল। জানা গেল- perianal abscess হয়েছিল। সাংঘাতিক যন্ত্রনাদায়ক অসুখ এটা।দুদিন পর মেয়ে বাড়ি ফিরেছে।এই ঝড় সামলে আমরা এখন অনেক টা শান্তিতে। এই বিপদের সময় যারা পাশে থেকেছ, সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে বলব ড: বিপ্লব চন্দ, শ্রী মধুসূদন দোলাই, রাজর্ষি সরকার, সুমিত অরোরা, অনিকেত চৌধুরী, মধুজা, অরিজিৎ , নন্দিতা সেন, রিংকু হালদার,ড: দেবাঞ্জন পান, শ্রী দেবাশিস জানা( মেয়র ইন কাউন্সিল),ড পার্থ গুহ ( বিধাননগর স্টেটজেনেরাল হসপিটাল)এবং অবশ্যই ড: নিশীথ কর্মকারের কথা।এই অবিশ্বাস ও প্রতারকে ভরা সময়ে এঁদের মত মানুষ ও হার্ট ক্লিনিকের মত প্রতিষ্ঠান , মানুষের প্রতি বিশ্বাস আরো গভীর করে। সবাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। অপরারেশ পরবর্তী সমস্ত সতর্কতা আপতত মেনে চলছেন ঋতাভরী। নায়িকার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন অনুরাগীরাও। বক্স অফিসে ঋতাভরীর শেষ ছবি ছিল ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি। লকডাউন শুরুর ঠিক আগেই মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। থিয়েটার তালাবন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ছবির ব্যবসা।