শেষ হল বুদ্ধদেবের অন্তিমযাত্রা। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে থামল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর শেষযাত্রা। জীবদ্দশাতেই নিজের দেহ দান করে গিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, সেইমতোই এদিন শববাহী♌ শকটে এনআরএসে পৌঁছায় বুদ্ধদেবের নিথর দেহ। মন ভার বাংলার। প্রায় ১০ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর গুরু দায়িত্ব সামলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যꩲ। তা সত্ত্বেও রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তর মতে, ‘হি ওয়াজ এ রাইট পার্সন ইন এ রং প্লেস’।
হ্যাঁ, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তর বিশ্বাস রাজনীতি সঠিক জায়গা ছিল না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। তাই সঠিক মূল্যায়ণও হয়নি তাঁর। আদ্যোপান্ত সংস্কৃতিমনস্ক ব্যক্তি ছিলেন বুদ্ধদেব।🧸 স♋ংবাদ প্রতিদিনকে নাট্যব্যক্তিত্ব জানান, ‘রাজনীতি ওঁর জায়গা নয়’। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল দুজনের। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের নাটকের দল নান্দিকারের জন্য সল্টলেকে জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব, এর জন্য রুদ্রপ্রসাদ আজও কৃতজ্ঞ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বন্ধু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রতি।
তিনি বলেন, ‘বুদ্ধবাবুর চল♚ে যাওয়াটা আমার ব্যক্তিগত লস। আমরা একপাড়ার বাসিন্দা ছিলাম শ্যামপুকুরের। পথ চলতে গিয়ে প্রায়ই দেখা হত, উনি যে কখন আমাকে দাদা বলেছেন, আর আমি বুদ্ধদেব মনেও নেই আজকে দাঁড়িয়ে’। সুসম্পর্ক ছিল মানেই মতের মিল হত তেমনটা নয়। রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের ‘ফুটবল’ নাটকের বিষয়বস্তুর সঙ্গে একমত হতে পারেননি বুদ্ধদেব। সেই নিয়ে তর্ক-বিতর্ক কম হয়নি। একটা সময় রাইটার্স বিল্ডিং-এ প্রায়দিনই বুদ্ধদেবের সঙ্গে আড্ডা দিতে যেতেন তাঁর পাড়াতুতো দাদা রুদ্রপ্রসাদ। বয়সে বুদ্ধদেবের চেয়ে প্রায় ৯ বছরের বড় তিনি। রাজনীতি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মত মিলত না। পুরোনো তর্ক-আড্ডাগুলো আজ মনের মধ্যে ভিড় করে আসছে।
রুদ্রপ্রসাদ প্রায় সময়ই বুদ্ধবাবুকে স্যামুয়েল জনসনের একটা প্রখ্যাত উক্তি শোনাতেন- ‘পলিটিক্স ইজ দ্য লাস্ট রিসর্ট অফ এ স্কাউন্ড্রেল🌃’। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘রাজনীতি হল বখাটেদের খেলা’। এই কথা শুনলে মুচকি হেসে বুদ্ধদেব একটাই জবাব দিতেন, 'সমাজে প্রচুর স্কাউন্ড্রেল থাকে, কিছু স্কাউন্ড্রেল রাজনীতিতেও দরকার’। এই সব স্মৃতি আগলেই অনুজকে মন 𓆏করলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এদিন মানু🔴ষের ঢল নেমেছিল। বুদ্ধদেবের শেষযাত্রায় মিলে মিশে গেল রাজনীতির রং। রাজ্য সরকারের তরফে গান স্যালুটে ‘না’ করে দেয় আলিমুদ্দিন। বুদ্ধদেবকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে পৌঁছেছিলেন তৃণমূলের 'যুবরাজ' অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। হাজারো মানুষের চোখের জল আর লাল সেলামে এদিন বিদায় নিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।