তাঁকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। খবরের শিরোনামে আজকাল হামেশাই থাকেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেজায় অ্যাক্টিভ কাঞ্চন মল্লিকের স্ত্রী। গত তিন বছর পর এই টেলি অভিনেত্রী সংবাদ শিরোনামে থেকেছেন কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের জেরে। চলতি বছরের গোড়াতেই কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। ৮ মাস যেতে না যেতেই শ্রীময়ীর কোল আলো করে আসে ফুটফুটে কন্যা সন্তান। 🌃আরও পড়ুন-মেয়েকে আগলাতে ব্যস্ত, প্রথম ‘সন্তান’কে সময় দিতে পারছেন না, কোলে নিয়ে আদর শ্রীময়ীর
♊একরত্তি মেয়েকে নিয়েই এখন কাটছে শ্রীময়ীর দিনরাত। মেয়ের ছবি শেয়ার না করলেও তাঁকে নিয়ে নানান খুঁটিনাটি শেয়ার করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। শুক্রবার শ্রীময়ীর জীবনের একটা বিশেষ দিন। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় মনের কথা লিখলেন কাঞ্চন-ঘরণী। শুক্রবার শ্রীময়ীর বাবা-মা'র ৪২ তম বিবাহবার্ষিকী।
🌳সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী লেখেন, ‘আজ আমার বাবা মায়ের ৪২তম বিবাহ বার্ষিকী, আমাকে অনেকে জিজ্ঞাসা করে সম্পর্ক বলতে তুমি কি বোঝ, তোমার কাছে সম্পর্ক কি, তুমি বিয়ে করেছ এত বয়সের পার্থক্যে,, আমার কাছে , সবকিছুর উত্তর একটাই আমার কাছে সম্পর্কের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হল আমার মা-বাবার সম্পর্ক। আমার মা-বাবার ও বয়সের ফারাক অনেকটা প্রায় ১০ বছর।দীর্ঘ ৪২ বছর তারা তাদের বিবাহিত জীবন পার করেছে, খারাপ ভালো সব মুহূর্ত কাটিয়েছে, আমি কখনো দেখিনি তাদের মধ্যে চূড়ান্ত অশান্তি, আমি কখনো দেখিনি বাবা-মাকে কখনো অসম্মান করেছে, আমি কখনো দেখিনি মা-বাবাকে অসম্মান করছে’।
𒊎তিনি আরও লেখেন, ‘আমি কখনো শুনিনি আমার মা-বাবাকে অকথ্য ভাষায় কথা বলতে ,আমি বা আমার দিদি বড় হয়েছি একটা সুস্থ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে, আমরা শৈশবটা শৈশবের মতো করে কাটিয়েছি, আমার মা হয়তো কোন অফিসে চাকরি করেনি, কিন্তু বাড়ির যে চাকরিটা পালন করেছে তার জন্যই বোধহয় আমার , দিদির ,আমার দিদির মেয়েরা , এমনকি এখন আমার মেয়ে তার দিদা এবং দাদুর যত্নে বড় হচ্ছে, বাবা অফিস থেকে এসে কি খাবে,আমাদের কোনটা দরকার, কোন টিচার দরকার, কোন খাবারটা মুখের কাছে তুলে দেওয়া দরকার, জ্বর হলে সারা রাত জেগে বসে থাকা, জলপট্টি দেওয়া, আমাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, টিউশনে নিয়ে যাওয়া, দিদিকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া ,টিউশনে নিয়ে যাওয়া, আমাকে একটা সময় পর্যন্ত শুটিংয়ে পৌঁছে ঘন্টার পর ঘন্টা বাইরে অপেক্ষা করে থাকা, এগুলো সব মায়ের অবদান। তার নাতনিদের কি ভালো লাগে, সবটাই মুখ বুঝে, হাসিমুখে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে করে এসেছে।’
🍷শুধু মায়ের কথা বলেই থামেননি শ্রীময়ী। জানিয়েছেন, তাঁর বাবা তাঁদের সংসারের চালক। তিনি লেখেন, ‘সংসারের কোনটা প্রয়োজন,জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ ,গ্যাসের বিল, ইলেকট্রিক বিল, আমারও দিদির স্কুল ফি, টিউশন ফি,মেয়েদের কি দরকার, সংসারের কি প্রয়োজন, কোন খেলনাটা নাতনিদের দরকার, কোন খাবারটা মেয়েদের বায়না, মায়ের কোন শাড়ি ,কোন গয়নাটা দরকার ,বাইরের পুরো জগৎটাই বাবা সামলেছে, এখনো সামলায়, তাই মা আর বাবা শব্দটা আমার কাছে খুব বড়, হয়তো মা-বাবার উপর অভিমান হয়, চিৎকার করি, আমি এ যুগের মেয়ে হয়ে বলতে পারি আমাদের মধ্যে সেই ধৈর্য নেই, যে ধৈর্য তারা অর্জন করেছে দীর্ঘ বছর ধরে। কিন্তু তবুও মায়ের থেকে শেখা, যে কিভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে সংসারী হতে হয়, কিভাবে সমস্ত রকম পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে হয়, আমি আমার মা বাবার থেকে শিখেছি কিভাবে সংসার গুছিয়ে নিতে হয়, আমি খুব কম বয়সে মা হয়েছি, এই জোরটাও আমি পেয়েছি আমার পরিবারের থেকে,,আমি খুব গর্বিত আমার পরিবার নিয়ে, আমার মা ও বাবা, জাঁকজমকতায় বিশ্বাস করে না, কোন বিবাহ বার্ষিকী,জন্মদিন উদযাপনে বিশ্বাস করে না, শুধু এটুকুই বিশ্বাস করে যে তার ছোট মেয়ে, ছোট জামাই, বড় মেয়ে, বড় জামাই ,বড় মেয়ের দুই মেয়ে দুই নাতনি এবং ছোট মেয়ের সদ্যোজাত মেয়ে, নাতনি নিয়ে তারা সুখে কাটাবেন, এখনো আমার মা আমার মেয়েকে নিয়ে রাত জাগে, আমাদের সুখটাই তাদের পরম সুখ।'
꧒সবশেষে শ্রীময়ী লেখেন, 'এটুকুই বলতে পারি মা-বাবাকে ,হয়তো সোশ্যাল মিডিয়াটাও তারা দেখতে জানে না ,আমার মা-বাবার কোন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট নেই, তারা চান না,,কিন্তু তাও আমি আজ শেয়ার করলাম কারণ কিছু কিছু কথা হয়তো তাদের বলা হয় না ,শুধু এটুকুই বলবো যেভাবে আমাকে, দিদিকে আমাদের পরিবারকে ছাতার মতো আগলে রেখেছ এভাবেই সারা জীবন থেকো। আর আমাদের কিছু চায় না তোমাদের থেকে ,শুভ বিবাহ বার্ষিকী। তোমাদের সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হোক।’
🧔বাবা-মা'র সাজানো সংসার দেখেই দাম্পত্য জীবনের আসল মানে শিখেছেন শ্রীময়ী। তাই তো সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘বিবাহিত জীবনে আমি নিরাপত্তার অভাববোধ করি না। আমি ও রকম মানুষ না যে, নিজেরটুকু বুঝে নিয়ে সরে যাব। পরিবারের সকলের ভাল চাই আমি। আমাদের সম্পর্কে কোনও চাওয়া-পাওয়া ছিল না। ও খুশি থাকলেই আমি খুশি। সে জন্যই হয়তো এত বছর পর আমাদের প্রেম পরিণতি পেয়েছে।’