সিরিজ: তালমার রোমিও জুলিয়েট
প্ল্যাটফর্ম: হইচই
পরিচালক: অর্পণ গড়াই
অভিনয়ে: দেবদত্ত রাহা, হিয়া দে, অনুজয় চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, পায়েল দে
রেটিং: ৪.২/৫
শাদি মে জরুর আনা ছবিটিতে একটি সংলাপ ছিল, প্রিয়জন বা কাছের কেউ যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে মন সত্যিই ভেঙে যায়। কিন্তু সঙ্গে আর কী কী পরিণাম হতে পারে, প্রতিশোধ স্পৃহা ঠিক কতটা ভয়ানক হতে পারে সেটাই যেন আধুনি꧅ক যুগের থুড়ি তালমার রোমিও জুলিয়েট দেখিয়ে দিল। কেমন হল অর্পণ🅘 গড়াইয়ের সিরিজ, জানাচ্ছে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
কী নিয়ে আবর্তিত হয়েছে তালমার রোমিও জুলিয়েটের গল্প?
তালমায় থাকে দুই পরিবার, চৌধুরী এবং মজুমদার। এই দুই পরিবারের প্র💝ধান লিয়াকত এবং বাদলের শত্রুতা দীর্ঘদিনের। কিন্তু সেই শত্রুতা জমি সংক্রান্ত। আর সেই শত্রুতায় জড়িয়ে পড়ে বাদলের ছেলে সোমনাথ এবং লিয়াকতের ভাইয়ের ছেলে মোস্তাক। এমন দুই পরিবারের সন্তান জাহানারা আর রানা। 🌠পারিবারিক ঝামেলা অশান্তির কথা জেনেও তাঁরা একে অন্যকে জান দিয়ে ভালোবাসে। রানার বন্ধু এবং বৌদির সহযোগিতায় লুকিয়ে চুরিয়ে চলতে থাকে তাদের প্রেম। কিন্তু দোলের দিন বিষয়টা জানাজানি হতেই জাহানারাকে তড়িঘড়ি বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয় চৌধুরী বাড়িতে। এদিকে রানার পাগল পাগল অবস্থা দেখে তার দাদা, বৌদি, দাদার বন্ধু এবং রানার বন্ধুরা ঠিক করে ওদের পালাতে সাহায্য করবে। তারপর....? কী ঘটে শেষ পর্যন্ত? ওরা পালাতে পারে নাকি ঘটে যায় অন্য কোনও ঘটনা? লুকিয়ে থাকে আর কোন কোন টুইস্ট সবটা সিরিজ দেখলেই জানা যাবে।
কেমন হল তালমার রোমিও জুলিয়েট?
দুর্দান্ত অথচ সাদামাটা এক তরুণ তরুণীর প্রেমের গল্পে আগাপাশতলা ভাবে কীভাবে প্রতিশোধ, রাগ, শত্রুতা জড়িয়ে আছে সে💮টাই যেন তুলে ধরল এই সিরিজ। তবে অন্যান্য কিছু বলার আগে বলি এই সিরিজের ইউএসপি এর ভাষা। না, কোনও শহুরে ভাষা ব্যবহৃত হয়নি। বরং আগাগোড়া উꦑত্তরবঙ্গের ভাষাতেই চরিত্ররা কথা বলেছেন।
এবার আসি বাকি জিনিসে। নায়ক নায়িকা দেবদত্ত এবং হিয়া হলেও, তালমার রোমিও জুলিয়েটে দুজনই 'নায়ক' আছেন। অনুজয় চট্টোপাধ্যায় এবং অনির্বাণ ভট্টাচার্য। তাঁদের অভিনয়, শরীরী ভাষা দুটো চরিত্রকে যে কী প্রচণ্ড রিলেট🌌েবল করে তুলেছে। অনির্বাণ তো টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতার একজন। কিন্তু অন্যদিকে অনুজয় যাহা বলিব সত্য বলিব থেকে লজ্জা সহ একাধিক সিরিজে যেভাবে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন তাতে মুগ্ধ হতে হয় বইকি! এই সিরিজও তার ব্যতিক্রম নয়। অন্যদিকে প্রেমে পাগল দুই তরুণ তরুণীর ভূমিকায় একেবারে পারফেক্ট ফিট দেবদত্ত এবং হিয়া। পায়েল দে এই গল্পের সবথেকে মিষ্টি চরিত্র, কিন্তু তাই কি? সেটার জবাব সিরিজেই মিলবে। কিন্তু নিজের চরিত্রটাকে ঠান্ডাভাবে যেভাবে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন সেটার প্রশংসা করতেই হয়।
আর এই সিরিজের দুই প্রাণ হল রানার দুই বন্ধু, দীপ এবং পাপাই। দুটো চরিত্রেই শিলাদিত্য চট্টোপাধ্যায় এবং উজান চট্টোপাধ্যায় যথাক্রমে দারুণ সাবলীল। উক্ত তাবডꦜ় তাবড় অভিনেতাদের সঙ্গে রীতিমত অভিনয়ের দক্ষতায় তাঁরা পাল্লা দিয়েছেন। দুর্বার শর্মা, জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বা কম যান কিসে?
আরও পড়ুন: ১৬ কোটির দোরগোꦍড়ায় বহুরূপী, তাও 'দুঃখিত' শিবপ্রসাদ! বললেন,😼 'ছবিটা আরও অনেকটা যেত, কিন্তু...'
এই সꦑিরিজের ভাষা এবং গল্প যদি রোমিও হয় তবে গানকে নিঃসন্দেহে জুলিয়েট বলা যায়। কোনও গানকেই অতিরিক্ত মনে হয়নি। উল্টে দেবরাজ ভট্টাচার্যর কন্ঠে প্রতিটি মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। (পড়ুন লুপে শোনার মতো)। ক্যামেরার কাজ, গল্প বলার ধরন সবটা মিলিয়ে বেশ লাগল তালমার রোমিও জুলিয়েট। সপ্তাহান্তে কাজের ফাঁকে বা অবসরে দেখে ফেলাই যায়। কারণ সিরিজের কথা মতো, 'সময় বয়ে যায়, 🐷এগিয়ে যায়। পড়ে থাকে গল্পেরা।'