চারদিকে এখন কেবল একটা জিনিস নিয়েই আলোচনা, চন্দ্রযান ৩ এবং ইসরোর সাফল্য। প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পা রাখল ভারত। সত্যি সত্যি চাঁদ মামার দেশের মাটিতে নামল চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডারཧ বিক্রম। এবার এটি ধীরে ধীরে সেখানকার মাটি, ইত্যাদির তথ্য পাঠাবে। তবে ২৩ অগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে যে ঘটনা ঘটল, যে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সৃষ্টি হল সেটা নিয়েই এখন চর্চা চলছে। ভারতীয়রা তো বটেই, বিদেশের মানুষরাও সকলে প্রশংসা করছে ইসরোর, শুভেচ্ছা জানাচ্ছে এই সাফল্যের। এবার সেই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তসলিমা নাসরিন বরাবরই স্পষ্টবক্তা। যে কোনও বিষয়ে নিজের🃏 মতামত অকপটে রাখতে পারেন। এবারও তার অন্যথা হল না। ভারতের এত বড় সাফল্যের পর কলম ধরলেন তিনি। ভারতের সঙ্গে প্রশংসা🦋 টানলেন পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের।
এদিন লেখিকা তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, 'ভারত এখন চাঁদে। চন্দ্রযান-৩ আলতো ভাবে চাঁদের মাটিতে পা রাখলো এই মাত্র। অভিনন্দন ভারত। অনেকে বলবে, এত দারিদ্র, এত লোক খেতে পায় না, এত লোকের বাড়িতে টয়লেট নেই, কী দরকার চাঁদে গিয়ে, এত টাকা খরচ করে? আমি বলব, বিজ্ঞানের অগ্রগতির দরকার সব সময়। একই সঙ্গে দারিদ্রও দূর করা দরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সচেতনতাও বাড়ানো দরকার। একটির উন্নতি করতে গেলে আরেকটির উন্নতি 🍨স্থগিত রাখতে হয় না।'
তিনি আরও লেখেন, 'ভারতের 🦂এককালের অংশ বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের কি আগামী ১০০ বছরে চাঁদে পা রাখা সম্ভব? না। তারা ধর্মে ডুবে আছে, বিজ্ঞানকে দূরে সরিয়ে। কোরানই নাকি তাদের বিজ্ঞান।'
আরও পড়ুন: 'অস্থির একটা প্রজন্ম তৈরি হয়েছে, এঁদের জন্য লিখতে ইচ্ছে করে না', কেন এমনটি 🌱লিখলেন তসল𓆉িমা?
অনেকেই তাঁর এই পোস্টে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। এক ব্যক্তি লেখেন, 'ভারতও ধর্মান্ধ দেশ। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সে-দেশের ক্ষমতায় কিন্তু ওরা দেশপ্রেমিক। আমাদের দেশের মূল সমস্যাটা ধর্মে নয়, আমাদের দেশপ্রেমের অভাব আছে। ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীস্বার্থ আমাদের কাছে বড়ো, দুর্নীতি আমাদের দেশে পাপ নয়, মিথ্যা অনৈতিক নয়। প্রগতির কথা যারা বেশি বেশি বলে তারাই বরং ঐক্য বিনষ্টে, গণতন্ত্র বিনষ্টে অধিক ভূমিকা রাখছে, দুর্নীতি বেশি করছে। ধার্মিক হয়েও যদি দুর্নীতিমুক্ত হতে পারত, দেশপ্রেম বুকে ধারণ করতে পারত তাহলে বাংলাদেশও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারত। ধার্মিক হওয়া সমস্যা নয়, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়িটা সমস্যা।' তাতে তসলিমা উত্তর দিয়ে লেখেন 'আমি মনে করি না বাংলাদেশের মানুষ দেশপ্রেমিক নয়। তারা দেশ থেকে বিদেশে পাড়ি জমালেও দেশ নিয়েই পড়ে থাকে। বাংলাদেশের অধিকাংশ লোকই বিজ্ঞানের সব সুবিধে নিচ্ছে, কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক নয়। রাষ্ট্র এবং সমাজের প্রভাবশালীরা জনগণকে অন্ধকারেই রাখতে চায়। ভারতের বেশির ভাগ লোক ধার্মিক, ইসরোর বিজ্ঞানীরাও ধর্ম বিশ্বাসী, তারপরও তাদের ধর্ম তাদের বিজ্ঞান গবেষণায় বাধা সৃষ্টি করে না। ভারতের কোনও রাষ্ট্রধর্ম নেই, এক মুসলিম ছাড়া অন্যান্য ধর্ম গোষ্ঠীর পারিবারিক আইন ধর্ম ভিত্তিক নয়। অন্যান্য ধর্মের সঙ্গে ইসলাম ধর্মের পার্থক্য হলো, ইসলাম ছাড়া বাকি সব ধর্মের রিফর্মেশান হয়েছে। ভারতের যত্র তত্র বিজ্ঞান ক্লাব 𒈔বা বিজ্ঞান গবেষণাগার খুলতে কোনও সমস্যা হয় না। বাংলাদেশে সমস্যা হয়। বাংলাদেশের দেশপ্রেমিকেরা পাড়ায় পাড়ায় বিজ্ঞান ক্লাবের বদলে মসজিদ মাদ্রাসা গড়তে আগ্রহী।'
আরও এক ব্যক্তি লেখেন, 'আমরা সরাসরি বেহেস্তে যেতে চাই। চাঁদে তো হুর-শরাব-গ্যালমান নাই!' এক নেটিজেনের মতে, 'একদমই তাই, বিজ্ঞানের অগ্রগতির ছাড়া জাতি🐼র উন্নতি, দেশের উন্নতি, দশের উন্নতি সম্ভব নয়'꧒।