সাধারণত চড়কের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত উৎসব হল গাজন। কিন্তু দুর্গাপুরের আমরাই গ্রামের কাহিনি কিছুটা ভিন্ন। এই গ্রামে চড়ꦺকে নয়, গাজন অনুষ্ঠিত হয় বুদ্ধ পূর্ণিমায়। তার নেপথ্যে রয়েছে এক বিশেষ কারণও।
বুদ্ধই ধর্ম নিরঞ্জন রূপে পূজিত
দুর্গাপুরের আমরাই গ্রাম শুধু নয়, বাংলার পশ্চিম দিকের বেশ কিছু এলাকাতেই বুদ্ধ পূর্ণিমায় গাজন উৎসব হয়। এর কারণ এই গাজন ♌ধর্মের গাজন। বা বলা ভালো ধর্মরাজের। ধর্মরাজ বলতেই অনেকের প্রথমেই হিন্দুধর্মের কথা মনে আসে। কিন্তু এখানে ধর্মরাজ আদতে হলেন বৌদ্ধধর্মের দেবতা। অনেকে বলে থাকে๊ন, স্বয়ং বুদ্ধই ধর্ম নিরঞ্জন রূপে পূজিত হন।
আরও পড়ুন - শুধু কাঁচা নুন নয🍸়, রোজকার খাবারের ৫ জিনিসও রক্তচাপ বাড়ায়, সা🍎মলে চলুন এখন থেকেই
বাঁকুড়ার নানা অঞ্চলেও পুজো
ধর্মরাজের কোনও মূর্তি নেই। একটি শিলাখণ্ডকে পুজো করার রীতি। বৌদ্ধধর্মে বুদ্ধদেবকে ধর্ম নিরঞ্জন রূপে আরধনার রীতি ছিল। বৌদ্ধধর্ম থেকে এই রীতি এসেছে বলে বাঁকুড়ার নান𝔉া অঞ্চলে এখনও ধর্মের মূর্ত𒉰ি হিসেবে চড়কের দিন বুদ্ধের মূর্তিকেই পুজো করতে দেখা যায়।
ধর্মের গাজনই আদতে শিবের গাজন?
অন্যদিকে শিবের গাজনের ইতিহাসও পাওয়া যায় বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে। সাধারণত এই গাজনই চৈত্র মাসের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে মনে করা হয় ধর্মের গাজনই আদতে শিবের গাজনের রূপ নিয়েছে বাংলায়। কারণ রাজধর্ম কখনও কখনও একটি বিস্তৃত অঞ্চলের ধর্ম হয়ে ওঠে। রাজার জন্য প্রজাদের মধ্যেও ব্যাপক ধর্মান্তরণ দেখা যায়। এই অবস্থায় ধর্ম পাল্টালেও উৎসব, সংস্কৃতি পাল্টানো ততটা সহজ হয় না। মনে করা হয় এভাবেই থেকে গিয়েছিল ধর্মরাজের আ♌রাধনা।
আরও পড়ুন - গভীর জঙ্গলে লুকিয়ে একღ প্রজাপতি! খুঁজে পেলে আপনার আইকিউকে টেক্কা দেওয়া কঠিন
বল্লাল সেনের আমলে
বল্লাল সেনের আগে বাংলায় ছিল বৌদ্ধধর্মের ব্যাপকতা। তখন বাংলার একটা বড় জনসংখ্যা বৌদ্ধ ছিল। কিন্তু বল্লাল সেনের সময় বৌদ্ধরা নিপী👍ড়িত হলেন। তাদের ধর্মান্তরণ হল। তখন পাল্টে গেল বাংলার বহু সংস্কার। বৌদ্ধধর্মের ধর্মরাজের আরাধনাও নাম পাল্টে ধর্মের গাজন হয়ে গেল। মিশে গেল বাংলার পার্বণের ভিড়ে।বাংলার জেলে, ডোম ইত্যাদি নিম্নবর্গীয়দের মধ্যে প্রচলিত ছিল বজ্রযানী বৌদ্ধ সংস্কৃতি। আবার তারাই ছিল শিবের একনিষ্ঠ উপাসক। ফলে দেখতে দেখতে ধর্মের গাজন হয়ে উঠল শিবের গাজন। তাই বুদ্ধ পূর্ণিমা হলেও আজও বাংলার বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত হয় ধর্মের গাজꦐন।