শুক্রবার রাত তখন ১০টা বেজে ৪০ মিনিট।𝐆 ঝাঁসির হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই রয়েছে টিনের ছাউনি 🦂দেওয়া একটি অংশ। যেখানে অপেক্ষা করছিলেন ৫৪টি সদ্যোজাত শিশুর মা!
তাঁদের সকলের সন্তানই সেই সময় ভর্তি রয়েছে হাসপাতালের নিকু (সদ্যোজাতদের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ বিভাগ) ওয়ার্ডে। মায়েরা অপেক্ষা করছিলেন, ক🐲তক্ষণে সন্তানদের স্তন্যপান করানোর ডাক পাবেন, সেই জন্য।
তখনও তাঁরা জানেন না, আর কয়েক মুহূর্তের মধ্যে কী ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে চলেছে! সেই সময়েই হাসপাতালের তরফে ঘোষণা করা হয়, ১০ জন মা প্রথমে আসবেন তাঁদের সদ্যোজাত সন্তানদের স্তন𓆏্যপান করাতে🥀।
এই ১০ জন মায়ের মধ্যেই ছিলেন রজনী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর শ্বশুর, পেশায় আইনজীবী রাম কৃপা💖ল সিং। রজনী সবেমাত্র পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন (৭ নভেম্বর, ২০২৪)। কিন্তু, শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় শিশুটিকে গত ৮ নভেম্বর থেকে ঝাঁসির এই হাসাপাতালের নিকু ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়।
রজনীকে দ্রুত ভিতরে যাওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছিলেন রাম কৃপাল সিং। কিন্তু, হঠ🦂াৎই তিনি থমকে যান। দেখেন, সামনে থেকে ছুটে আসছেন একজন নার্স। ভয়ে চিৎকার করছেন তিনি। তাঁর শালোয়ারে আগুন জ্বলছে!
ওই ন🌃ার্স চিৎকার করতে শুরু কর💛েন, 'আগুন লেগেছে! আগুন লেগেছে! বাচ্চাদের বাঁচান!' নার্সের ঠিক পিছনেই ঘন কুয়াশার মতো ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে এগিয়ে আসছিল! সেই ধোঁয়ায় দ্রুত ওই চত্বর ভরে যায়।
সেই মুহূর্তের🅰 কথা স্মরণ করে এখনও চ♏মকে উঠছেন রাম কৃপাল সিং। তিনি বলেন, 'আমি দৌড়ে ভিতরে গেলাম। আমার চোখ জ্বালা করছিল। দম বন্ধ হয়ে আসছিল। আমার কাছে ভাবার মতো সময় ছিল না। শুধু আমি যতগুলো সম্ভব, ততগুলো বাচ্চাকে তুলে নিয়েছিলাম। আমি মনে হয় ১৫টি কিংবা তার থেকেও বেশি শিশুকে তুলে নিয়ে লোকজনের হাতে তাদের দিয়ে দিয়েছিলাম। তাঁরা বাচ্চাগুলিকে দ্রুত বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন।'
রাম কৃপাল বলেন, 'মনে হচ্ছিল যেন বোমা ফেটেছে। সেই বোমার কোনও🔯 শব্দ নেই, কিন্তু তা প্রাণঘাতী! বাচ্চাগুলো ঝলসে গিয়েছিল। সেই অবস্থাতেও কয়েকটি শিশু খুব ক্ষীণ গলায় কাঁদছিল। চারিদিকে শুধু আগুন আর আগুন!'
রাম কৃপাল আরও জানিয়েছেন🦄, তাঁরা অনেক কষ্টে ওই ওয়ার্ডের একটি জানলার লোহার গ্রিল ভেঙে ফেলেন, তাতে সামান্য পরিমাণ ধোঁয়া 𒀰বের করা গেলেও আদতে কোনও লাভ হয়নি।
সেখানে পবন নামে একজন ওয়ার্ড বয় ছিলেন। রাম কৃপাল জানান, মাত্র এক মিনিটের মধ্যে পবন সেখানে রাখা চারটি ফায়ার এক্সটিংগুইশারের সবকটিই🔜 ব্যবহার করে ফেলেছিলেন।💙 কিন্তু, তাতেও আগুন বাগে আনা যায়নি।
অন্যদিকে, যাঁদের সন্তান ভিত♛রে ছিল, তাঁরা সকলেই তখন ভিতরে ঢুকে নিজেদের বাচ্চাকে বাঁচাতে চাইছিলেন। সেটা করতে গিয়ে বহু মহিলাও ভিতরে আটকে পড়েন। এদিকে, বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যা💯য়।
সেই সময়ে সেখানে হাসপাতাল꧃ের চিকিৎসক ও কর্মীদের একাংশ এসে পৌঁছন। তাঁরা তাঁদের মোবাইলের টর্চ জ্বেলে সকলকে পথ দেখিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
রাম কৃপাল জানান, চিকিৎসকরা কোনও ক্রমে দগ্ধ শিশুদ🍎ের কোলে তুলে জরুরি বিভাগের দিকে দৌড়চ্ছিলেন। অনেক বাবা-মাও তাঁদের পিছনে দৌড়চ্ছিলেন। কিন্তু, সেই শিশু তখনও জীবিত ছিল কিনা, তা বোঝা অসম্ভব 🐽ছিল।
এদিকে, হাসপাতালে আরও একটি নিকু ওয়ার্ড নির্মাণের কাজ চলছে।🍸 যার জেরে ঘটনাস্থলে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচไ্ছুক দমকলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নিকু ওয়ার্ডের নকশা এবং মাত্র দু'টি ঢোকা-বেরোনোর পথ তাঁদের উদ্ধার কাজে অন্যতম প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
রাম কৃপাল এবং তাঁর মতো অন্যান্য একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী মনে করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্যই এত বড় একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত, এই 🔴ঘটনার পর রাম কৃপাল সিংয়ের নাতিকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।