গত ৫ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের হাথরাস জেলায় কেরালার সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পান গ্রেফতার হওয়ার পরে তদন্তে উঠে এসেছে মৌলবাদী মুসলিম সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের চমকপ্রদ অভিযোগ। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এমনই দাবি করেছেন উত্তর প্রদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। কাপ্পানের তরফে কেরালা ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস-এর (KUWJ) জমা দেওয়া অ্যাফিড্যাভিট-এর জবাব দিতে গিয়ে গতকাল আদালতকে মেহতা জানান, ‘অভিযুক্ত আদালতে উপস্থিত নেই। কী ভাবে কোনও সংগঠন তাঁর হয়ে আবেদন জানাতে পারে? উনি এমন এক সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত, তেজাস নামে যে কাগজ তিন বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে চমকপ্রদ তথ্য উদ্ধার হয়েছে।’KUWJ-এর আইনজীবী কপিল সিবালকে প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানায়, কোনও অভিযুক্ত কোনও অপরাধের সূত্রে জেলবন্দি থাকাকালীন তাঁর হয়ে এর আগে কোনও সংগঠন হেবিয়াস কর্পাস আবেদন জমা দিয়েছে কি না, তা এলাহাবাদ হাই কোর্টে গিয়ে খতিয়ে দেখতে। উত্তর প্রদেশ সরকারের আইনজীবীর আপত্তি দূর করতে তাই কাপ্পানের স্ত্রীকে পিটিশনে যুক্ত করতে রাজি হন সিবাল। তবে তাঁর যুক্তি, বিষয়টি স্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, কাপ্পানের বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা অভিযোগে পূর্ণ। তাঁর যুক্তি, রিপোর্টে ইউপি পুলিশ দাবি করে যে, কাপ্পানের গ্রেফতারির খবর তাঁর ভাই ও মামাকে দেওয়া হয়েছিল। অথচ বাস্তবে কাপ্পানের কোনও ভাই নেই। সিবাল বলেন, ‘যে সব টেলিফোন নম্বর এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলির অস্তিত্ব নেই। ওদের অভিযোগ শুনে চমকে উঠতে হয়।’উত্তরে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ তাঁকে জানায়, ‘ওঁর (কাপ্পানের) স্ত্রীকে মামলায় জড়ালেও আমাদের প্রশ্ন, আপনি হাই কোর্টে কেন যাচ্ছেন না?’এতে কিছু দিন আগে আর এক সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীর গ্রেফতারি মামলার প্রসঙ্গে টেনে আনেন সিবাল। তিনি বলেন, সে ক্ষেত্রে যদি সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযুক্তের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়ে থাকে, তা হলে কাপ্পানের ক্ষেত্রে কেন তা প্রযোজ্য হবে না?কিন্তু বর্ষীয়ান আইনজীবীর প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে আদালত জানায়, ‘প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে ভিন্ন ঘটনা যুক্ত।’ অভিযুক্তের অ্যাফিড্যাভিটের জবাব দেওয়ার জন্য উত্তর প্রদেশ সরকারকে সময় দিতে মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সপ্তাহে হবে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।