সমলিঙ্গে বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার বিরোধিতা করল কেন্দ্র। বরং নিজের ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করলেন, সমলিঙ্গে বিবাহ শুধুমাত্র বিধিবদ্ধ নিয়মের পরিপন্থী নয়, তা সেই ধরনের বিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না সমাজ ও মূল্যবোধ। দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি এন প্যাটেল এবং বিচারপতি প্রতীক জালানের ডিভিশন বেঞ্চে সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘আমাদের সমাজে ইতিমধ্যে যে নিয়ম আছে, তা এই ধরনের বিবাহের পরিপন্থী। আমাদের মূল্যবোধ দু'জন একই লিঙ্গের মানুষের মধ্যে এমন বিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না। যা (বিবাহ) পবিত্র।’ যদিও সলিসিটর জেনারেল স্পষ্ট করে দেন যে সেটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইনের আওতায় সমলিঙ্গ মানুষের মধ্যে বিবাহের আর্জি জানিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিলেন চারজন। আর্জিতে জানানো হয়, এই ধরনের বিবাহের ক্ষেত্রে বাধা থাকার ফলে তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মেহতা দাবি করেন, আইনেও সমকামী বিবাহের কোনও নিয়ম নেই। আর সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র সমকামিতাকে অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছে, আর কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘এটা সাংবিধানিক মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না।’সেই সওয়ালের জবাবে বিচারপতি প্রতীক জালান মন্তব্য করেন, বিশ্বের সর্বত্র পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশে যখন দু'জন পুরুষ বিয়ে করেন, তখন তাঁদের কেউ স্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হন না। আর্জির সবদিক খতিয়ে দেখতে বলে হবে জানান বিচারপতি জালান।আবেদনকারীদের আইনজীবী রাঘব আওয়াস্তি জানান, শুধু দু'জন হিন্দুর মধ্যে বিবাহ হবে কিনা, তা হিন্দু বিবাহ আইনের কোথাও বলা নেই। তাই সমলিঙ্গে বিবাহের ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাধা নেই বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জানান, হিন্দু বিবাহ আইনের আওতায় যে সুবিধা আছে, তা পান না সমলিঙ্গে বিবাহ করা মানুষরা। হাইকোর্ট জানতে চায়, কোনও কর্তৃপক্ষে সমলিঙ্গে বিবাহ নথিভুক্ত করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কিনা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মানুষরা কেন নিজেরা আদালতের দ্বারস্থ হননি, তাও জানতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ। প্রত্যুত্তরে আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, তিনজন বিবাহ নথিভুক্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁরা অবশ্য জনসমক্ষে এসে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে ইচ্ছুক নন।