পশ্চিমবঙ্গ–সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে এবার নির্বাচনী সংস্কারে আরও বেশি জোর দিল ভারতের নির্বাচন কমিশন। শেষ হওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ঠিক কী কী খামতি ছিল তা খতিয়ে দেখতে একটি কোর কমিটি গঠন করেছে তারা। এই কমিটির কাজ হবে ঠিক কি কারণে করোনা বিধি সঠিকভাবে কার্যকর করা গেল না তা খতিয়ে দেখা। পাশাপাশি নির্বাচনী বিধি ব্যবস্থায় কি কি খামতি এখনও থেকে গিয়েছে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে নির্দিষ্ট প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করবে এই কোর কমিটি।নির্বাচন কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল উমেশ সিনহার নেতৃত্বে এই ব্যাপারে একটি কোর কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই কোর কমিটিকে বিস্তারিত আলোচনা সেরে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের হাত আরও শক্ত করতে আইনি বিধি শক্তিশালী করার পাশাপাশি আদর্শ নির্বাচন বিধি পালনে আরও কড়াকড়ি করার বিষয়টিতে জোর দেওয়া প্রয়োজন কি না, সে বিষয়েও আলোচনা হবে বলে ঠিক হয়েছে।প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁরা দ্রুত যাবতীয় ত্রুটি–বিচ্যুতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, যাবতীয় ভুলভ্রান্তি খতিয়ে দেখা হচ্ছে যাতে আগামী দিনে এই ভুলগুলি আর না ঘটে। নির্বাচনের সময় প্রতিটি রাজ্যে করোনা বিধি কঠোরভাবে কার্যকর করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী আধিকারিকের ওপর ন্যস্ত ছিল। ঠিক কি কারণে নির্বাচনী আধিকারিকরা এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হলেন সেটা খতিয়ে দেখা হবে। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরাও বারবার নিজেদের অসহায়তার কথা জানিয়েছেন। কেন এই যোগাযোগের অভাব ঘটল তাও খতিয়ে দেখবে এই কোর কমিটি।একইভাবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক এবং রিটার্নিং অফিসারদের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি নির্বাচনী সংস্কারের আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে রাখা হয়েছে। অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে আর্থিক খরচের ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর নির্বাচনী সংস্কারের প্রসঙ্গে ৯টি কার্যকরী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। তারা যেসব প্রস্তাব দিয়েছে, সেগুলি নিয়েও কমিশনের কোর কমিটিতে আলোচনা হবে।উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন গত এপ্রিল মাসে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনের গাফিলতিতেই দেশে করোনা সংক্রমনের ব্যাপক বাড়বাড়ন্ত। এমনকী বিচারপতি ক্ষোভের সুরে বলেছিলেন, দেশে করোনায় এত অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা উচিত।