তাঁকে 'মৌন প্রধানমন্ত্রী' বলে অভিহিত করত মিডিয়ার একাংশ এবং বিরোধীরা। এমনকী মোদী জমানাতেও কংগ্রেসকে তোপ দাগতে এই শব্দবন্ধের ব্যবহার করতে শোনা গিয়েছিল বিজেপি নেতাদের। তবে নিজের সেই 'তকমা' নিয়ে ভিন্ন মত ছিল মনমোহন সিংয়ের। এই নিয়ে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে নিজে মুখ খুলেছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি বলেছিলেন, 'লোকে বলে, আমি নীরব প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। আমি মনে করি এই স্মর তাদের কথা তুল ধরে। আমি সেই প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না যিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতাম। আমি নিয়মিত প্রেসের সঙ্গে দেখা করতাম, প্রতিটি বিদেশ সফরে আমি বিমানেই বা বিমান থেকে অবতরণের পরই সাংবাদিক বৈঠক করতাম।' (আরও পড়ুন: 'খুনের ষড়যন্ত্র', ভারত-বাং🍰লাদেশ চুক্তির 'ফাঁকে' ফেরানো যাবে না হাসিনাকে?)
আরও পড়ুন: ১৯𓄧৯১ সালের জুন, মনমোহন তখন ঘুমাচ্ছেন, সেই একটা ফোন কল বদলে দেয় ভারতকে...
উল্লেখ্য, দেশের ত্রয়োদশ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। যদিও তাঁর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের 'ক্ষমতার আসল কেন্দ্রবিন্দু' ছিল অন্যত্র। জীবনে একবার মাত্র লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন মনমোহন সিং। তাতে তিনি হেরেছিলেন। তবে সংস্কারক হিসেবে নিজের দর বুঝিয়েছিলেন মনমোহন। তাই নির্বাচনী রাজনীতির অংশ না হয়েও সংসদে তিনি থেকেছেন। এদিকে 'জননেতা' হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তবে এর জন্যেই হয়ত মনমোহন সিংকেই ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন সোনিয়া গান্ধী। এদিকে ইউপিএ জমানায় ক্যাবিনেটের উপর ছিল ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল। যা নিয়ে আজও বিতর্ক হয়। (আরও পড়ুন: 'সারা বিশ্ব স্পষ্ট ভাবে শুনু🀅ক…', ৯১'র বাজেটে কী বলে স্বপ্ন দꦗেখিয়েছিলেন মনমোহন?)
আরও পড়ুন: 'ইতিহাস আমার প্রতি সদয় হবে', মিডিয়ার ওপর꧑ যখন 'অভিমান' ♎করেছিলেন মনমোহন
২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০০৯ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ফের ক্ষমতায় আসে ইউপিএ। ১৯৯১ সালের পর কংগ্রেসের সবচেয়ে ভালো নির্বাচনী ফল হয়েছিল ২০০৯ সালে। আর তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মনমোহন। তবে নিজের দ্বিতীয় টার্মে তিনি পদে থাকলেও ক্ষমতা যেন তাঁর হাতে ছিল না। তবে তিনি তাও গদিতে বসেছিলেন। রাজনীতির কচকচানি সহ্য করেও জোট টিকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তবে রাজনীতির স্বার্থেই দুর্নীতির অভিযোগ সহ্য করতে💖 হয়েছিল তাঁকে। তাঁর ক্যাবিনেটে পাশ হওয়া অর্ডিনেন্স ছিঁড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সেটাই যেন ছিল তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অন্তের সূচনা। তখনও নীরব ছিলেন মনমোহন। পরে বিরোধীদের শত আক্রমণেও নীরব থেকেছেন মিতভাষী মনমোহন। তবে নিজের মতো দেশের হয়ে কাজ করেছেন। তিন দশক সংসদীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও মনমোহন রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন কি না, তা নিয়ে হয়ত সন্দেহ থেকে যেতে পারে অনেকের মনে, তবে তিনি যে 'সংস্কারক' ছিলেন, তা মেনে নিয়েছেন বিজেপি নেতারাও।