ব্রিটিশ আমলে চালু হওয়া ব্যক্তিগত বার্তাবাহক বা ডাক হরকরার মাধ্যমে গোপনীয় নথিপত্র পাঠানোর রেওয়াজে দাঁড়ি টানার সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় রেল। পরিবর্তে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই কাজ সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল বোর্ড।জানা গিয়েছে, খরচ কমানোর উদ্দেশেই বিভাগীয় স্তরে এই পরিবর্তন সম্পাদন করবে রেল মন্ত্রক। গত ২৪ জুলাই প্রকাশিত রেলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ব্যয় সঙ্কোচন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সঞ্চয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, রেলওয়েস পিএসইউ বা রেলওয়ে বোর্ডের অধীনস্থ সব আথিকারিক ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগের কারণে ব্যক্তিগত বার্তাবাহক বা ডাক হরকরা ব্যবস্থা অবিলম্বে বন্ধ করা হবে।’বলা হয়েছে, ‘এই বিষয়ে সমস্ত সহায়তা করা হবে, কারণ এতে উল্লেখযোগ্য হারে পরিবহণ, স্টেশনারি, ফ্যাক্স ইত্যাদি বাবদ খরচ বাঁচানো যাবে।’ব্রিটিশ আমল থেকেই রেলের বিভিন্ন দফতরের মধ্যে গোপনীয় ও সংবেদনশীল নথিপত্র চালাচালির জন্য পিওন শ্রেণিভুক্ত ডাক হরকরাদের নিয়োগ করার রীতি চালু ছিল। সে আমলে ই মেল, ভিডিয়ো কনফারেন্সিং ইত্যাদি পরিষেবা চালু হয়নি বলেই এই ব্যবস্থা জারি হয়েছিল। রেলের ডাক হরকরা পদ অবলুপ্তি ছাড়াও সম্প্রতি নতুন পদ তৈরির প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা, ওয়ার্কশপে কর্মীসংখ্যা যথাযথ রাখা, আউটসোর্স কাজের ভার সিএসআর-এর উপরে দেওয়া, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দফতরের নানান অনুষ্ঠান পরিচালনা করার মতো বেশ কিছু ব্যয় সাশ্রয়কারী পদক্ষেপ করেছে রেল মন্ত্রক। এ ছাড়াও, রেলের প্রতি বিভাগে কর্মীপিছু খরচ কমানো, কর্মীসংখ্যা যুক্তিযুক্ত রাখা এবং একজন কর্মীকে দিয়ে একাধিক কাজ করানোর মতো উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে রেল বোর্ড। পাশাপাশি, সমস্ত ফাইল সংক্রান্ত কাজ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে রেলের বিভিন্ন বিভাগে। ই মেল মারফৎ যোগাযোগ রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে প্রিন্টারের কার্ট্রিজ-সহ স্টেশনারি সামগ্রী ব্যবহারের হার কমানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করতে বলা হয়েছে রেল মন্ত্রকের অধীনস্থ সমস্ত অলাভদায়ী শাখাও। রেলকর্তারাও বলছেন, দফতরের বেশিরভাগ যোগাযোগ বর্তমানে ই মেল মারফৎ হওয়ার দরুণ ডাক হরকরাদের এখন ইতিহাসের পাতাতেই জায়গা হওয়া উচিত। রেল মন্ত্রকের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে সেই কারণেই শেষ হল ব্রিটিশ যুগের এক অধ্যায়।