বাংলায় বাম–কংগ্রেস জোটে কী নির্বাচনের আগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে? এই প্রশ্ন এখন উঠতে শুরু করেছে। দিল্লি থেকে কংগ্রেস হাইকমান্ড এই জোট মজবুত ও অটুট রাখার কথা বললেও বাস্তব অন্য কথা বলছে। কারণ কেরলের রাজনীতিতে হেরফের ঘটে গিয়েছে। কয়েক দশকের শরিকি সম্পর্ক ত্যাগ করে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ) জোট থেকে বেরিয়ে এল কেরল কংগ্রেস (মণি)। এমনকী রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি। দলটির প্রধান জোসে কে মণি এরপর বাম দলগুলির লেফট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ) জোটে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।উল্লেখ্য, কেরল কংগ্রেস প্রধান কে মণি ইউডিএফ–এর সমর্থনেই রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন দু’বছর আগে। তার আগে টানা ৩৮ বছর ধরে কংগ্রেসের ছত্রছায়ায় ইউডিএফ জোটের অংশ ছিল দলটি। তবে ইউডিএফ জোটে মণির বিরোধী পক্ষ যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের উপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। এরপরই ইউডিএফ–এর পক্ষ থেকে কোট্টাম লোকসভা আসন এবং দুটি বিধায়ক পদ ছেড়ে দিতে বলেছে। যা জোটের সাহায্যে জিতেছিল তারা।জানা গিয়েছে, কেরল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা কেএম মণির মৃত্যুর পরই দলটি ভেঙে গিয়ে দুটি ভাগ হয়েছিল। একটি অংশের মাথায় বসেছিলে জোসে মণি। অন্যটির নেতৃত্বে ছিলেন পিজে জোসেফ। এই পিজে জোসেফের গোষ্ঠীর সঙ্গে কংগ্রেস হাত মেলানোয় ইউডিএফ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন জোসে মণি। তবে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘এই ঘটনা দেখাল কেরলে বামেরাই ঠিক।’এদিকে কংগ্রেস শিবির ছেড়ে বাম শিবিরে যোগ দিয়েই ইউডিএফ–এর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন জোসে কে মণি। তাঁর দাবি, ‘আমরা ইউডিএফ শিবিরে ভুগছিলাম। কংগ্রেস নেতারা আমাদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করত। আর আমাদের প্রতিপক্ষ পি জে জোসেফকে সমর্থন করত। যে আমাদের দলের সম্ভাবনাকে খাটো করত। তাই নিস্বার্থভাবে এলডিএফ–এ যোগ দিলাম।’কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বক্তব্য, এলডিএফ–এ কেরল কংগ্রেসের যোগদান রাজ্যের রাজনীতিতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। পরবর্তী সময়ে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির রাজনৈতিক অঙ্গীকার আরও বেশি শক্তিশালী হবে এতে। যদিও ইউডিএফের আহ্বায়ক এমএম হাসান বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা। ওই দলের উচিত সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া। বামপন্থী মনোভাবাপন্ন কে এম মণি এবং এখন তাঁর ছেলে একই কাজ করেছে।’আসলে কেরল কংগ্রেস মূলত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী একটি দল। মধ্য ট্র্যাভাঙ্কোরে এই দলটি বেশি শক্তিশালী। গত লোকসভার খারাপ ফলের পর রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটারদের মন জয় করতে চাইছে বাম দলগুলি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।