সংসদে উপযুক্ত ও গঠনমূলক বিতর্কের অভাবে আইনে প্রচুর ফাঁক ও ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে। যা হতাশাজনক। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংসদে উভয় কক্ষে গঠনমূলক আলোচনার ভিত্তিতে আইন প্রণয়নের বিষয়টি তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সেই সময় সংসদে জ্ঞানপূর্ণ ও গঠনমূলক বিতর্ক হত। আলোচনা করা হত বিভিন্ন রকমের আইন নিয়ে। তার ফলে সেই আইনগুলি প্রণয়ণের ক্ষেত্রে আদালতের উপর ভার কম থাকত। আমাদের কাছে স্পষ্ট ছবি থাকত যে কেন আইন তৈরি করছে ওরা (সংসদ)।’ সেই প্রসঙ্গে ১৯৪৭ সালের শিল্প বিরোধ সংক্রান্ত আইন পাশ করানোর বিষয়ে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। সেই বিল পেশের সময় বড়সড় বক্তৃতা রেখেছিলেন মাদুরাইয়ের সিপিআইএম সাংসদ পি রামামূর্তি। বিস্তারিতভাবে বিলের প্রভাব এবং কীভাবে সেই বিল শ্রমজীবীদের উপর প্রভাব ফেলবে, সে বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যে আইন তৈরি করা হচ্ছে, তা নিয়ে সংসদ আলোচনা করত।’ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই পরিস্থিতি পুরো পালটে গিয়েছে বলে আক্ষেপ করেছেন প্রধান বিচারপতি। যিনি রবিবার সুপ্রিম কোর্টের বার কোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, এখন হতাশাজনক অবস্থা। ‘প্রচুর ফাঁকফোকর এবং ধোঁয়াশা ভরতি আইন দেখছি আমরা। আইনে কোনও স্পষ্টতা নেই। আমরা জানি না যে কী কারণে আইন তৈরি করা হচ্ছে। তার ফলে প্রচুর মামলা দায়ের হচ্ছে, সরকারের অসুবিধা এবং লোকসানের পাশাপাশি জনসাধারণের অসুবিধা হচ্ছে।’ সেইসঙ্গে পুরনো দিনের সংসদের গঠনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটাই হয়, যখন জ্ঞানী এবং আইনজীবীদের মতো পেশাদাররা সংসদে থাকেন না।’ সেজন্য আইনজীবীদের সক্রিয়ভাবে সামাজিক ও জনজীবনে অংশগ্রহণের আর্জি জানান প্রধান বিচারপতি।