উহানের ভাইরোলজি ল্যাব থেকেই সম্ভবত ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এমনই দাবি করেছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী ডেভিড বাল্টিমোর। কিন্তু সেই বক্তব্য থেকে সরে এলেন তিনি। বললেন, 'হয় তো একটু বাড়িয়েই বলে ফেলেছি।'করোনাভাইরাসের উত্স হিসাবে যদিও এখনও উহানকেই চিহ্নিত করা হয়। ভাইরাসের উত্স হিসাবে উহানের মাংস, সামুদ্রিক খাবারের বাজারকেই সন্দেহ করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে অবশ্য সন্দেহ ঘুরে যায় উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির দিকে। ডেভিডের সুরেই উহানের কোনও ল্যাব থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে বলে দাবি করেছিলেন একাধিক প্রথম সারির বিজ্ঞানী।গত বছর নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী বলেছিলেন, 'সার্স-কোভ-২-এর জিনোমের একটি নির্দিষ্ট চরিত্র ‘ফিউরিন ক্লিভেজ সাইট’ আছে। এটি অন্য সার্স-কোভ-এর ক্ষেত্রে এর আগে মেলেনি।ডেভিড সেই সময়ে আশঙ্কা করেছিলেন যে, নতুন এই বৈশিষ্ট্যগুলি করোনাভাইরাসের জিনোমে গবেষণাগারেই ঢোকানো হয়েছে। 'সার্স-কোভ-২ যে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি নয়, জিনোমের এই নতুন চরিত্রই তার প্রমাণ,' আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেছিলেন ডেভিড।যদিও বর্তমানে সেই দাবি থেকে সরে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, 'ফিউরিন ক্লিভেজ রয়েছে বলেই সেটা প্রাকৃতিক, নাকি কৃত্রিম ভাবে (মলিকিউলার ম্যানিপুলেশন) তৈরি, সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছনো অসম্ভব।'১৯৭৫ সালে ৩৭ বছর বয়সে ফিজিওলজি এবং মেডিসিনে গবেষণার জন্য নোবেল পান ডেভিড বাল্টিমোর। তবে, উহানের সেই ল্যাবকে এত সহজে ক্লিনচিট দিতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়, গত ২০১৯ সালের নভেম্বরে উহান ইন্সিটিটউটের ৩ গবেষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সেই গবেষণাগারেরই আরও বেশ কয়েকজন গবেষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের প্রত্যেকেরই উপসর্গই করোনার লক্ষণের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। যদিও সেই প্রতিবেদনের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে চিন।গত মার্চে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে যদিও অন্য কথা বলা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়, 'চিনের গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের উত্পত্তি হওয়ার সম্ভবনা একেবারেই নেই বললেই চলে।'যদিও ফেব্রুয়ারিতে উহান থেকে WHO-এর বিশেষজ্ঞ দলের পাঠানো চিঠিতে এমন সম্ভাবনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। সেখানে বলা হয়েছে, 'গবেষণাগার থেকে ভুল করে ছড়িয়ে পড়া বা পশুদের থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ শুরু হওয়া- দুটি তত্ত্বই এখনও তাত্পর্যপূর্ণ। বিশ্বমারীর উত্পত্তি জানতে আরও তদন্ত প্রয়োজন।'