তামিলনাড়ুর একজন ইঞ্জিনিয়ার মাস্কাট থেকে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টার কারণে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গুজরাটের দ্বারকা জেলার ওখা শহর থেকে তিন ইরানি নাগরিকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি স্যাটেলাইট ফোন এবং ১০ গ্রাম হেরোইনের পাশাপাশি পুলিশ আটটি মোবাইল, দুটি ল্যাপটপ, ২.৫০ লাখ ইরানি রিয়াল, একটি জিপিএস ডিভাইস এবং ১৫টি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করেছে।গোপন তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় অপরাধ দমন শাখা এবং ওখা মেরিন পুলিশের একটি যৌথ অভিযানে ভোর ৩টের দিকে ওখা বন্দর অঞ্চলে সিগনেচার ব্রিজের কাছে সন্দেহজনকভাবে একটি নৌকাকে আটক করে পুলিশ। তামিলনাড়ুর বাসিন্দা অশোক কুমার মাথুরেলা (৩৭) সহ তিন ইরানি নাগরিক মোস্তফা বালুচি (৩৮), জাশেম বালুচি (২৫) এবং আমির হুসেন বালুচি (১৯) ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। তবে অবৈধ অনুপ্রবেশের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মাথুরেলার ভাই আনন্দকে (৩৫) পরে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তদন্তে জানা গেছে যে অশোক, গত কয়েক বছর ধরে ওমানের মাস্কাটে টেকনিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত সংস্থার সঙ্গে কিছু বিরোধের কারণে তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করেছিল ওমানের সংস্থাটি। পাসপোর্ট না থাকার কারণে তার পক্ষে দেশে ফিরে আসা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। কোয়েম্বাটুরের বাসিন্দা অশোক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি একজন মিশরীয় মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের পর তাদের মেয়েকে নিজের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ওই মহিলা। কিন্তু অশোকের পাসপোর্ট না থাকায় তিনি ভারতে ফিরে নতুন পাসপোর্ট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।সমাধান হিসেবে সমুদ্রপথে গুজরাটে পৌঁছানোর পরামর্শ দিয়েছিল তার ইরানি বন্ধু। অশোক ইরান থেকে গুজরাটে পৌঁছাতে তার ইরানি বন্ধুকে প্রায় ৮,০০০ ওমানি রিয়াল দিয়েছিল একটি স্যাটেলাইট ফোন, একটি নৌকা এবং মাঝি জোগাড় করার জন্য। অশোক সমুদ্রপথে ওমান থেকে ইরানে পৌঁছানোর সময়, তার ছোট ভাই আনন্দ একদিন আগে একটি ফ্লাইটে রাজকোটে পৌঁছান এবং তারপরে তার বড় ভাইকে অভ্যর্থনা জানাতে ওখা পৌঁছান।ইরান থেকে গুজরাট যাওয়ার সময় স্যাটেলাইট ফোনের সাহায্যে অশোক তার ইরানি বন্ধুর সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখেন। ধৃত সকলের বিরুদ্ধে এনডিপিএস আইন, পাসপোর্ট আইন এবং বিদেশী আইনের ধারায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশি জেরায় তিন ইরানি নিজেদেরকে জেলে বলে পরিচয় দিয়েছে। পুলিশ বলেছে যে এটি একটি বড় ধরনের জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘন, কারণ দেশে অশান্তি ছড়াতে চাওয়া দুষ্কৃতকারীরা অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য একই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে।