করোনা মোকাবিলায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরিতে প্রয়োজনীয় ইথানল প্রস্তুত করতে ফুড কর্পোরেশনের গুদামে মজুত অতিরিক্ত চাল ব্যবহারে সায় দিল কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন যে গরীবরা না খেয়ে মরছে, সরকার সেখানে তাদের ভাগের চাল দিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানাচ্ছে। যদিও রাহুলের এই বক্তব্যকে নেতিবাচক মানসিকতার পরিচয় বলে সমালোচনা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান। রাহুল গান্ধী টুইটারে বলেন যে গরীবরা কবে জেগে উঠবেন? আপনারা না খেয়ে মরছেন ও আপনাদের ভাগের চাল দিয়ে বড়লোকদের হাত ধোওয়া হচ্ছে। কেরালার অর্থমন্ত্রীও বলেন যে যেখানে সস্তায় সাবান ও জল দিয়ে হাত ধোয়া যায়, সেখানে চাল দিয়ে স্যানিটাইজার বানিয়ে কাজ কী। প্রসঙ্গত এফসিআই-এর গুদামে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য জমা আছে। সেই দিয়েই ইনানল বানাতে চায় কেন্দ্র। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, চাল সমেত অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য গরীবদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার। রাহুলের বক্তব্যের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান বলেন কংগ্রেস নেতা কি চান গরীবরা মরে যাক। শুধু কি বড়লোকরাই মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করবে, এই প্রশ্ন করেন তিনি।এরকম নেতিবাচক মনোভাব দেশের জন্য ক্ষতিকারক বলে দাবি করেন তিনি। খাদ্যমন্ত্রী বলেন যে স্যানিটাইজার বানানো হচ্ছে যাতে গরীবরাও ব্যবহার করতে পারে। পিডিএসের মাধ্যমে ৮১ কোটি গরীবকে খেতে দেওয়ার জন্য ১৮ মাসের খাদ্যশস্য মজুত আছে বলেও তিনি জানান।তবে ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে শস্য পৌঁছে দেওয়া রাজ্যগুলির দায়িত্ব, সাফ জানান তিনি। তিন মাসের বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে বলে জানান পাসওয়ান। ২০১৮ সালে গৃহীত জাতীয় জৈব জ্বালানি নীতি অনুযায়ী, অতিরিক্ত ফসল উঠলে NBCC-এর অনুমোদনের ভিত্তিতে খাদ্যশস্য থেকে ইথানল তৈরি করা হয়। কিছু দিন আগে ইথানল কাজে লাগিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানাতে চিনি উৎপাদক সংস্থা ও পরিশোধনাগারগুলিকে নির্দেশ দেয় প্রশাসন।সাধারণত পেট্রল বিপণন সংস্থাগুলিকে ইথানল সরবরাহ করে চিনিকলগুলি। তারই কিছুটা কাজে লাগিয়ে হাসপাতালের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়েছে ওই সমস্ত সংস্থা। নামমাত্র অথবা বিনামূল্যে হাসপাতালে স্যানিটাইজার পৌঁছতে তাদের সাহায্য করছে শুল্ক দফতর এবং জাতীয় ওযুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি।সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার গুদামে বর্তমানে ৩০৯.৭০ কোটি টন চাল এবং ২৭৫.২০ কোটি টন গম মজুত রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী খাদ্যশস্য হিসেবে মোট ২১০ কোটি টন গুদামে মজুত রাখা দরকার। গত ১ এপ্রিলের হিসেবের ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, তার চেয়ে অনেকই বেশি মজুত রয়েছে খাদ্যশস্য।জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, লকডাউন চলাকালীন প্রতি মাসে ৮০ কোটি মানুষের জন্য ভরতুকিতে মাথাপিছু ৫ কেজি খাদ্যশস্য সরবরাহ করছে সরকার।