কোভিত অতিমারীর জেরে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ৬ মাসের বেশি সময় এবং আরও বেশি ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টে নতুন হলফনামা পেশ করে জানাল ভারতের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নিয়ন্ত্রক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ছয় মাসের বেশি সময় দেওয়া হলে সমগ্র ঋণ ব্যবস্থা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়বে, যার বিধ্বংসী প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতির অন্তর্গত ঋণ প্রকল্প সৃষ্টিতে। শুধু তাই নয়, এর ফলে নির্ধারিত ঋণ পরিশোধ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে অপরাধমূলক প্রবৃত্তি মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে ঋণ গ্রহীতাদের উপরেও বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আরবিআই।গত সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের জমা দেওয়া হলফনামা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। হলফনামায় সুদের উপর সুদ নেওয়া হবে না বলে উল্লেখ থাকলেও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে কোনও উল্লেখ করা হয়নি বলে বিরক্তি প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত রূপায়ণে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে কিছু বলা হয়নি বলেও জানায় আদালত। গত ২ অক্টোবর কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের জমা দেওয়া হলফনামায় জানানো হয়েছিল যে, Covid-19 পরিস্থিতির কারণে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গ্রহীতা এবং মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে ছয় মাসের জন্য সুদের উপরে ধার্য সুদ মকুব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। তবে রিয়েল এস্টেট-সহ অন্যান্য একাধিক শিল্পের তরফ থেকেও সুদ মকুব ও ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন উঠলে সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্র জানায়, ঘোষিত ছাড়ের অতিরিক্ত কোনও সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়।এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, অতিমারী পরিস্থিতিত তৈরি হওয়ার আগেই বিভিন্ন কারণে চাপের মুখে পড়েছিল রিয়েল এস্টেট ও বিদ্যুৎ শিল্প। শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক পরিষেবায় ছাড় দিয়ে সেই সমস্যার সমাধান করা অসম্ভব বলে জানায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কও। ঋণ পরিশোধ ব্যবস্থায় সরকারি বিজ্ঞপ্তির জেরে বেশ কিছু ঋণ গ্রহীতা অভিযোগ করেন, ঋণদাতার মর্জি মাফিক বাছাই করা গ্রহীতাদের ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।এই প্রসঙ্গে ঋণ গ্রহীতাদের আরও কিছু সুবিধা দেওয়া যায় কি না জানাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তারই জেরে নতুন হলফনামা পেশ করে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করল আরবিআই।