ছাত্রীদের হিজাব পরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল মুম্বইয়ের চেম্বুরের আচার্য ও ডিকে মরাঠে কলেজ। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে ওই বেসরকারি কলেজের জারি করা পোশাক বিধিকে চ্যালেঞ্জ মামলার শুনানি হয়। সেই মামলায় বিচারপতি সঞ্জীব খান্না♛ এবং পিভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ কলেজের নিষেধাজ্ঞার ওপর আংশিক স্থগিতাদেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে নারী𒀰দের ক্ষমতায়নে কলেজের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের কলেজে নিষিদ্ধ হিজাব-নিকাব, সিদ্ধান্ত বহাল রাখল বমꦑ্বে হাইকোর্ট
এদিন মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট কলেজের এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। শীর্ষ আদালত জানায়, ছাত্রীরা যা চায় তা পরতে দেওয়া উচিত। ধর্মের দোহাই দিয়ে হিজাব, বোরখা নিষিদ্ধ করা হলে টিপ বা তিলক কেন নিষিদ্ধ করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। কলেজের উদ্দেশ্যে বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘আপনি কি তিলক বা মেয়েদের টিপ পরা নিষিদ্ধ করেছেন!’ এছাড়াও কলেজের এই সিদ্ধান্ত নারীর ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে কাজ করবে বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। কলেজের উদ্দেশ্যে শীর্ষ আদালত মন্তব্য করে, ‘কী পরতে হবে তা বলে আপনি কীভাবে নারীদের ক্ষꦡমতায়ন করছেন? সেখানে মহিলাদের জন্য পছন্দের কী থাকল? এখন আপনাদের হঠাৎ করে মনে হয়েছে যে ছাত্রীরা হিজাব পরছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে স্বাধীনতার বহু বছর পরে আপনারা বলছেন এই দেশে ধর্ম আছে।’
কলেজ কর্তৃপক্ষকে আরও ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত বলে, ‘এমন নিয়ম আরোপ করবেন না..এটা কি? ধর্ম প্রকাশ করবেন না!’ বিচারপতি খান্না কলেজের যুক্তি উল্লেখ করে মন্তব্য করেন, পড়⛎ুয়াদের ধর্ম প্🐲রকাশ না করার জন্য এই নিয়ম জারি করা হয়েছিল।
শুনানির সময় কলেজের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মাধবী দিভান। তিনি বলেন, কলেজে ৪৪১ জন মুসলিম ছাত্র পড়ুয়া আছে। এতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। শুধুমাত্র কয়েকজন মুসলিম ছাত্রী আপত্তি জানিয়েছেন। এরপরেই বিচারপতি কুমার প্রশ্ন করেন, ‘মেয়েটি কী পরতে চায় তা কি তার উপর নির্ভর করবে না?’ বিচারপতি কুমার মন্তব্য করেছেন যে কলেজগুলির দ্বা🉐রা এই ধরনের নিয়ম তৈরি বন্ধ করতে হবে।
গত জুন মাসে চেম্বুরের আচার্য ও ডিকে মরাঠে কলেজের কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের জন্য পোশাকবিধি নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন।জানা যাচ্ছে, এতদিন প্রতিষ্ঠানে হিজাব, বোরখা, নিকাবের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। তবে চলতি বছরের শুরুতে হঠাৎ করে নতুন ড্ღরেস কোড জারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তাতে জানানো হয়, বোরখা, নিকাব, হিজাব, বা কোনও ধর্মীয় শনাক্তকারী যেমন ব্যাজ, ক্যাপ বা স্টোল কলেজের ভিতরে পরা চলবে না। ছেলেদের জন্য শুধুমাত্র ফুল বা হাফ শার্ট এবং ট্রাউজার নির্ধারিত করা হয় নতুন ড্ꦆরেস কোডে। তারই প্রতিবাদ জানিয়ে কলেজের মুসলিম ছাত্রীরা প্রথমে মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে অভিযোগ জানান। এরপরে তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু, হাইকোর্ট কলেজের নিষেধাজ্ঞায় কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। পরে ছাত্রীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।