সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তৈরি বিতর্কে এবার জড়াল দশের বর্ষীয়ান ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের নামও। তাঁর বিরুদ্ধে ভাষণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করলেন কেরালার রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান।শনিবার তিরুবনন্তপুরমের কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেসে উদ্বোধনী ভাষণ দিতে গিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেন রাজ্যপাল। যা হতে পারত ঐতিহ্যশালী এই অনুষ্ঠানের সাধারণ মুখবন্ধ, এ দিন তাতে সিএএ এবং কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে এনে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের বিক্ষোভ উসকে দেন আরিফ মহম্মদ খান।ভাষণে তিনি বলেন, দেশভাগের সময় পাকিস্তানের অ-মুসলিমদের মহাত্মা গান্ধী এবং জওহরলাল নেহরু যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়িত হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রণয়নের দ্বারা।রাজ্যপালের কথায় প্রতিবাদ জানান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র প্রতিনিধিরা। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যপাল অযথা উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষক ও গবেষকদের একাংশও রাজ্যপালের দাবির প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ইতিহাসবিদ তথা ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি সোসাইটির প্রাক্তন সভাপতি ইরফান হাবিবও রাজ্যপালকে ভাষণ থামানোর জন্য আর্জি জানান।আবেদন উপেক্ষা করে ক্রমাগত প্রতিবাদীদের উদ্দেশে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলে চলেন আরিফ। হাবিবকে তিনি বলেন, ‘আমার ভাষণ থামানোর কোনও অধিকার আপনার নেই।’বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের উদ্দেশে রাজ্যপাল বলেন, ‘আপনারা যখনই বিতর্ক ও আলোচনার জন্য দরজা বন্ধ করে দেবেন, তখনই আপনারা হিংসার সংস্কৃতি তৈরি করবেন।’এ দিন সিএএ ও এনআরসি ইস্যুতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখানোর প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন পড়ুয়ারা। অনুষ্ঠানে দর্শকাসনে হাজির ছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা। রাজ্যপালের ভাষণের প্রতিবাদে তাঁরা পালটা স্লোগান দিয়ে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন।বিক্ষোভের মাঝে কোনও রকমে ভাষণ শেষ করেন রাজ্যপাল। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে আসরে নামে পুলিশ। অনুষ্ঠানস্থল থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর।পরে রাজ্যপালের দফতর থেকে ঘটনার নিন্দা করে টুইট করা হয়। সেখানে ইরফান হাবিবের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের বক্তৃতায় বাধা দানের অভিযোগ জানানো হয়েছে।শুধু তাই নয়, তিনি রাজ্যপালকে মৌলানা আবুল কালাম আজাদের বদলে নাথুরাম গডসের নাম উল্লেখ করতে বলেন বলেও অভিযোগ আরিফ মহম্মদ খানের।