বাড়ির উঠানে খেলছিল বছর ছয়ের এক কিশোরী। সেই সময়েই হঠাত্ই তাকে এসে ধরে একটি চিতাবাঘ। মেয়েকে বাঁচাতে চিতাবাঘটিকে মেরে তাড়ালেন মা। তাঁর লাঠির আঘাতে মেয়েটিকে ফেলে পালায় চিতাবাঘটি। উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ বন বিভাগের নানপাড়া রেঞ্জ এলাকার ঘটনা। খয়রিঘাট থানার গির্দা গ্রামের বাসিন্দা রাকেশের ছয় বছরের মেয়ে কাজল। ঘটনার দিন উঠানে খেলছিল সে। তার মা রীনা ঝাঁট দিচ্ছিলেন। হঠাৎই পাশের ঝোপ থেকে উঠোনে একটি চিতাবাঘ ঢুকে পড়ে। সোজা মেয়েটিকে আক্রমণ করে সে। চোয়ালে চেপে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। সঙ্গে সঙ্গে রীনা প্রাণ লাঠি চিতাবাঘটির দিকে ছুটে যান। পরের পর লাঠির আঘাত হানতে থাকেন। অতর্কিত আক্রমণে চিতাবাঘটি মেয়েটিকে ফেলে পালিয়ে যায়। চিতাবাঘের আক্রমণে কাজল মুখ ও মাথায় গুরুতর আহত হয়।ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীদের ভিড় জমে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে নিকটবর্তী শিবপুর পিএইচসিতে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা তাকে মেডিকেল কলেজে রেফার করেন। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। নানপাড়া রেঞ্জ অফিসে খবর দেওয়া হয়। ফরেস্ট রেঞ্জার রশিদ জামীল তাঁর দল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। গ্রামের চারপাশে চিতাবাঘটির খোঁজ চালানো হচ্ছে। স্থানীয়দের বাড়ির ভিতরে থাকতে বলা হয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নলিখিত কারণে বাঘ মানুষের উপর আক্রমণ করে:১. প্রজননকাল, শাবক রয়েছে এমন বাঘ অত্যন্ত টেরিটরিয়াল ও সাবধানী হয়। ফলে তাদের এলাকায় প্রবেশ করলে আক্রমণ হানে।২. আহত, অসুস্থ, বয়স্ক বাঘের পক্ষে দ্রুতগামী হরিণ জাতীয় প্রাণীর নাগাল পাওয়া কঠিন। ফলে তারা গবাদি পশু এবং কখনও কখনও মানুষের মতো সহজ শিকার বেছে নেয়। সেই কারণে লোকালয়ে চলে আসে।৩. এর আগেও মানুষ ধরার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন বাঘ সহজ শিকার হিসাবে মানুষ ধরার চেষ্টা করে। তবে তা বেশ বিরল। ৪. বনাঞ্চল কেটে বাড়ি-কৃষিজমি, জলস্তর বৃদ্ধির ফলে জঙ্গলে প্লাবন ইত্যাদি কারণে বাঘের খাদ্য যে তৃণভোজী প্রাণীরা, তাদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। ফলে বাড়ছে লোকালয়ে বাঘের প্রবেশ। আর তাতেই বাড়ছে বাঘ-মানুষ সংঘাত।