৫ অগস্ট অযোধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে রাম মন্দিরের ভূমি পুজো ও শিলান্যাস হবে। তবে ভূমি পুজোর আগে অযোধ্যায় হনুমান গঢ়িতে বজরংবলীর দর্শন করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী অযোধ্যায় রামের দর্শনের আগে তাঁর প্রিয় ভক্ত বজরংবলীর দর্শন ও আজ্ঞা নেওয়া জরুরি। হনুমান গঢ়ি মন্দির অযোধ্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্দির। এখানে রামের প্রিয় ভক্ত হনুমানের বাস। এই মন্দিরে ৬ ইঞ্চির বালক বজরংবলীর প্রতিমা আছে। একটি টিলায় অবস্থিত হনুমান গঢ়ির মন্দির। বালক হনুমানের দর্শনের জন্য ৭৬টি সিঁড়ি উঠতে হয়। হনুমানের সঙ্গে তাঁর মা অঞ্জনীও আছেন এই মন্দিরে। মন্দির পরিসরে অঞ্জনীর কোলে দেখা যায় হনুমানকে। মন্দিরের চারপাশের দেওয়ালে হনুমান চালিশার পংক্তি লেখা রয়েছে।প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, হনুমান গঢ়িতে রাজা হিসেবে বজরংবলীর রাজতিলক করেন রাম। একটি গুহায় বসবাস করে বজরংবলী রামজন্মভূমি ও অযোধ্যার রক্ষা করেন। বজরংবলীর সেবা ও ভক্তিতে প্রসন্ন হয়ে, রাম বলেন, যাঁরা অযোধ্যায় আমার দর্শনের জন্য আসবেন, তাঁদের সবার আগে হনুমানের দর্শন, পুজো ও অনুমতি নিতে হবে। হনুমানের অনুমতি না-নিয়ে ও পুজো না-করে রামের দর্শন ও পুজোর ফল পাওয়া যায় না। রামচরিত মানসের সুন্দরকাণ্ডে বলা হয়েছে যে, বজরংবলী রামের সবচেয়ে প্রিয় ভক্ত। তাই রামের দর্শন ও আশীর্বাদ লাভের জন্য বজরংবলীর দর্শন ও আশীর্বাদ নিতে হয়। এ কারণে হনুমান গঢ়িতে বজরংবলীর পুজোর পর রামের দর্শনের পরম্পরা প্রচলিত।অর্থববেদে অযোধ্যাকে ঈশ্বরের নগর বলা হয়েছে। রাবণ বধ ও লঙ্কা বিজয়ের পর রাম যখন অযোধ্যা ফেরেন, তখন বজরংবলী সেখানে থাকা শুরু করেন। এ কারণে এর নাম হয় হনুমান গঢ় বা হনুমান কোট। এখান থেকেই হনুমান রামকোটের রক্ষা করতেন। হনুমান গঢ়ির মন্দিরের নির্মাণ করান রাজা বিক্রমাদিত্য। পরে নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ এর জীর্ণোদ্ধার করান।প্রচলিত আছে যে, নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ কুষ্ঠ রোগে পীড়িত ছিলেন। তাঁর মন্ত্রী তাঁকে জানান যে, হনুমানপীরে অভয়রামদাস নামে এক ফকির থাকেন। অযোধ্যা পৌঁছে অভয়রামদাসের সঙ্গে দেখা করেন ওয়াজিদ আলি শাহ। অভয়রামদাসের সামনে উপস্থিত হলে, নবাবকে চিমটের বাড়ি মেরে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন ফকির। হনুমান গঢ়ি থেকে বাইরে বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই নবাবের কুষ্ঠ সেরে যায়। এর পর হনুমান গঢ়ি মন্দির মেরামতির জন্য তিনি অভয় রামদাসের কাছে প্রার্থনা করেন। বহু কাকুত-মিনতির পরে ফকির তাঁর প্রস্তাবে রাজি হলে হনুমান গঢ়ির জীর্ণোদ্ধার করেন ওয়াজিদ আলি শাহ।