একধাক্কায় পাশের হার অনেকটা বেড়েছে। কিন্তু সার্বিকভাবে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা মান যথেষ্ট কমেছে। এমনটাই উঠে আসছে পরিসংখ্যানে। তার জেরে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে শিক্ষা মহল।উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার পাশের হার ঠেকেছে ৯৭.৬৯ শতাংশে। গতবার যা প্রথমবার ৯০ শতাংশের গণ্ডি ছুঁয়েছিল (৯০.১৩ শতাংশ)। কিন্তু নম্বরের ভিত্তিতে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, এবার প্রথম ডিভিশন পেয়েছেন ৩১৯,৩২৭ জন পড়ুয়া। গতবারের থেকে তা সামান্য কম। অথচ গত বছর যে ৬৮০,০৫৭ জন পাশ করেছিলেন। এবার সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৭৯৯,০৮৮।তবে সবথেকে বেশি ফারাক দেখা গিয়েছে ‘ও’ (৯০-১০০ শতাংশ) এবং ‘এ+’ (৮০-৮৯ শতাংশ) গ্রেড প্রাপকদের ক্ষেত্রে। গতবারের তুলনায় তো ‘ও’ প্রাপকের সংখ্যা তিনগুণ কমে গিয়েছে। গত বছর ৩০,২২০ জন পরীক্ষার্থী ৯০ শতাংশ বা বেশি নম্বর পেয়েছিলেন। যা শতাংশের বিচারে ৪.৪ শতাংশ। এবার সেটা ঠেকেছে ১.১৩ শতাংশে। সংসদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাত্র ৯,১০৩ জন ‘ও’ গ্রেড পেয়েছে। ‘এ+’ গ্রেডের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটা শোচনীয় না হলেও গতবারের তুলনায় এবার ৮০ থেকে ৮৯ শতাংশ নম্বর পাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। গত বছর ৮৪,৭৪৬ জন ‘এ+’ গ্রেড পেয়েছিলেন। এবার যা ৪৯,৩৭০-তে ঠেকেছে। শতাংশের নিরিখে বিচার করলে আরও বেআব্রু হবে এবারের পরিসংখ্যান। ২০২০ সালে যেখানে ১২.৪৬ শতাংশ পড়ুয়া ‘এ+’ গ্রেড পেয়েছিলেন, এবার তা ঠেকেছে মাত্র ৬.১৭ শতাংশে।কিন্তু সার্বিকভাবে কেন এতটা মান খারাপ হল? সেই প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন তত্ত্ব উঠে আসছে। একাংশের মতে, একাদশ শ্রেণিতে অনেক পড়ুয়ারই ফল খারাপ হয়ে থাকে। সেই ধাক্কা খেয়ে পরবর্তীকালে উচ্চ মাধ্যমিকে বাড়তি জোর দেন। তার ফলে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যে ঢের পার্থক্য থাকে। তবে সেই তত্ত্বে পুরোপুরি সায় নেই অনেকের। তাঁদের মতে, এখন ভিতটাই নড়বড় থেকে যাচ্ছে। সহজে পাস হয়ে গেলেও ভিত ঠিক না হওয়ায় ভালো ফল করতে পারছেন না। তারইমধ্যে একাংশের ধারণা, কোনও কোনও স্কুল আবার একাদশে কিছুটা কড়া হাতে উত্তরপত্র দেখে থাকে। তার প্রভাবও পড়তে পারে সার্বিক রেজাল্টের উপর। কারণ এবার তো মাধ্যমিক, একাদশ শ্রেণির বার্ষিক এবং দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাক্টিকাল না প্রজেক্টের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়েছে।