একে একে কেটে গিয়েছে প্রায় ১২টি দিন। তারপরও এখনও বাংলার বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউকে ফেরাতে পারেনি ভারত সরকার। এমনকী তাঁর পরিবারকে কোনও ইতিবাচক ইঙ্গিতও দেখাতে পারেনি কেন্দ্র বলে অভিযোগ। আর তার ফলেই পূর্ণমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী সাউ স্বামীর কর্মস্থল পাঠানকোটে খোঁজ নিতে যান। এই বিষয়ে বিদেশমন্ত্রক এখনও কোনও তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসেনি। আর তাই সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছে সাউ পরিবার। বিএসএফের পক্ষ থেকে রিষড়ার বাড়িতে এসে শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পূর্ণমকে কবে ফিরিয়ে আনা হবে সেটা নিয়ে মোটেই কোনও তথ্য পাননি পূর্ণমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। এবার বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ, মুর্শিদাবাদ সফরের সময় এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়। তার জবাব দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ বাড়ান তিনি। এমনকী পূর্ণম সাউকে ফেরানোর দাবিতে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, সোমবার বহরমপুর রওনা হওয়ার আগে হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের জওয়ান, সাউজির কোনও খবর নেই। আমাদের পক্ষ থেকে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। পূর্ণম সাউকে ফিরিয়ে আনতেই হবে।’
আরও পড়ুন: অর্জুন সিংয়ের গড়ে বিজেপিতে ব্যাপক ভাঙন, তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন শতাধিক কর্মী
শনিবার রাজস্থান থেকে একজন পাক রেঞ্জারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে বিএসএফ। তাতেই হুগলির রিষড়ার সাউবাড়ির সদস্যরা আশার আলো দেখছেন। পূর্ণমের স্ত্রী এবার জানান, ১২ দিন কেটে গেলেও তাঁদের কাছে পূর্ণমের বিষয়ে কোনও খবর আসেনি। তবে এই রেঞ্জার ধরা পড়ায় আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন রজনী। কারণ সীমান্ত পেরিয়ে এপারে এসেছিল ওই পাক রেঞ্জার। বিএসএফের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। এবার হয়তো পূর্ণম সাউয়ের হদিশ মিলবে। কারণ, ভারতের হাতে এই পাক রেঞ্জার ধরা পড়ার জেরে একজনের বদলে অন্যজনকে ফেরত পাওয়ার রাস্তা খুলে যেতে পারে। আর এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘ওই বিষয়ে কেন্দ্র যা পদক্ষেপ নেবে, আমরা সম্পূর্ণ সমর্থন করব। ভাগাভাগি আমরা করি না। আমরা সবরকমভাবে পরিবারের পাশে আছি। সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছি। পূর্ণম সাউকে ফেরাতেই হবে।’
আরও পড়ুন: কেটে গিয়েছে ১২টি দিন, ফেরানো যায়নি পূর্ণমকে, এক পাক রেঞ্জারের গ্রেফতারে আশা স্ত্রীর
সূত্রের খবর, পাকিস্তানে সেনাকে ছাড়াতে শনিবারই ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বসেছিল দুই দেশের সেনা অফিসাররা। সেখানে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ওই জওয়ানের মুক্তির দাবি করা হয়েছে। তাই এখন মনে করা হচ্ছে একের বদলে এক ফর্মুলায় এবার পূর্ণম সাউকে ছেড়ে দিতে পারে পাকিস্তান। এপ্রিল মাসের শেষদিকে আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘনের অভিযোগে পাঠানকোট সীমান্ত থেকে বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউকে পাকিস্তান সেনা আটক করেছিল। তারপর থেকে নানা টালবাহানা করলেও ছাড়েনি জওয়ান পূর্ণমকে। আর ওই জওয়ানকে ফেরাতে কেমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তাও অজানা। তাই চাপ বাড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।