কয়লা ভাঙতে গিয়ে বিস্ফোরণে প্রাণ গেল একাধিক শ্রমিকের। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানার ভাদুলিয়া গ্রামে। ইতিমধ্যেই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারিতে সেই সময় কয়লা ভাঙার কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। হঠাৎই বিকট শব্দ শোনা যায়। ঘটনাস্থলে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিকের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। আহত হন আরও অনেকে।প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই ঘটনায় অন্তত সাতজন শ্রমিকের মৃত্যুর কথা বলা হলেও, পরবর্তীতে সরকারিভাবে ছ'জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়। সেইসঙ্গে, এই বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে তিন শ্রমিকের অবস্থা গুরুতর বলেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।বিভিন্ন প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবর অনুসারে, অসাবধানতার কারণেই এদিন এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়লা খনিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য প্রতিদিন দু'টি ট্রাকে করে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিস্ফোরক নিয়ে আসা হয়। কিন্তু, সোমবার সমপরিমাণ বিস্ফোরকই আনা হয়েছিল একটি ট্রাকে।মনে করা হচ্ছে, এই ওভারলোডিংয়ের কারণেই বিস্ফোরক বোঝাই ওই ট্রাকে বিস্ফোরণ ঘটে। এদিকে, কয়লা খনির শ্রমিকেরা বিস্ফোরকের কাছকাছি থেকে কাজ করতে অভ্যস্থ। ফলে, বিস্ফোরক বোঝাই ট্রাক দেখেও কেউ সাবধান হননি। নিজেদের মতো কাজ করে যাচ্ছিলেন। তার ফলেই এত বড় অঘটন ঘটে যায়।স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, বিস্ফোরণের পরই সংস্থার আধিকারিকরা এলাকা ছেড়ে চম্পট দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করায়। কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে তারা।এদিকে, এই ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে শোক জ্ঞাপন করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যে ছয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।সেইসঙ্গে, স্বজনহারা প্রত্যেকটি পরিবারকে আরও ২ লক্ষ টাকার সহযোগিতা করা হবে এবং পরিবারের একজন সদস্যকে হোম গার্ডের চাকরিও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই বীরভূমের একটি পাথর খাদানের কাজ করতে নেমে প্রাণ গিয়েছিল তিন শ্রমিকের। তাঁরা খাদানে পাথর ভাঙার কাজ করতেন। মর্মান্তিক সেই ঘটনাটি ঘটেছিল জেলার মহিষাগড়িয়া গ্রামের কাছে অবস্থিত একটি পাথর খাদানে।পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, প্রবল বৃষ্টির জেরে খাদানে ধস নামে। তার জেরেই মাটি চাপা পড়ে প্রাণ যায় তিন শ্রমিকের।