আবগারি দফতরের হস্তক্ষেপে আচমকাই পানশালায় গান–বাজনা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। তার জেরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে বারশিল্পীরা।সুরের মূর্চ্ছনায় দু’পাত্র সুরা–পানের শখ আবার বন্ধ হয়ে গেল। দুর্গাপুজোর আগে মিলেছিল সন্ধ্যায় আলো– আঁধারির ঘেরাটোপে সুরের মূর্চ্ছনায় সুরাপানের ঘণ্টাখানেকের ছাড়পত্র। শহরের বিভিন্ন পানশালা ও লাউঞ্জ বারে রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চালু হয়েছিল গান–বাজনার সঙ্গে নিজের স্নায়ুকে বেলাগাম করার নেশা। যা পুজোর পরেও চালু রাখার জন্য ছিল শীতল আকুতি। কিন্তু লালবাজারে দরবার করে সেই শৌখিন দাবির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা মাঠে মারা গেল। পানশালা মালিক থেকে ব্যান্ড লিডার সংগঠনের কর্তার দাবির সে গুড়েও বালি। লালবাজারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল নয়। আবগারি দফতরের কোনও লিখিত নির্দেশিকা হাতে পাননি পানশালার মালিকেরা। কিন্তু আবগারি কর্তাদের চটিয়ে গান–বাজনা চালাতে চাইছেন না অধিকাংশ পানশালার মালিকই। তবে গান–বাজনা বন্ধ হলে বিপাকে পড়বেন এই পেশার সঙ্গে জড়িত শিল্পী, কলাকুশলী এবং ডিজে। যাঁরা প্রতি রাতে গোলাপি আভা তুলে ধরে নিজেদের সুরে–তালে। আর তাতেই সভা ভরে ওঠে শহুরে শৌখিনতায়। ছড়িয়ে পড়ে টাকা। বেরিয়ে আসে উ্ল্লাস–আনন্দ। আর তাতেই সংসার চলে এই শিল্পী–কলাকুশলীদের।চাঁদনি চক এলাকার একটি সাবেক পানশালায় আবগারি দফতরের নির্দেশ এল, সব বন্ধ করতে হবে। তবে পুলিশও কিছু বলতে পারছে না। সেক্টর ফাইভের একটি লাউঞ্জ বারে এসএমএস এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ আসা পর্যন্ত গান–বাজনা করা বা গান বাজানো, কিছুই চলবে না। আর পার্ক স্ট্রিটের পানশালার কাছে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। আবগারি বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘আবগারি কমিশনারের নির্দেশেই বিভিন্ন পানশালাকে গান–বাজনা বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’করোনার অতিমারি পরিস্থিতিতে পানশালার গানবাজনা বন্ধের পেছনে কী যুক্তি থাকতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। ব্যান্ড লিডারদের সংগঠনের সদস্য অর্জুন সোমের কথায়, ‘গান–বাজনার জায়গায় দূরত্ব রাখা এবং নাচানাচির ভিড় এড়িয়ে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কী হল, বুঝছি না!’ পানশালায় সুরের হিল্লোল তোলা ঝড়ে মাতিয়ে রাখা বার সিঙ্গার টুইঙ্কল বলেন, ‘এত কষ্ট করেও শেষরক্ষা হল না। এখন কী করে বেঁচে থাকব, জানি না। ভরসা মুখ্যমন্ত্রীই।’