এবার কলকꦰাতায় পা রাখলেন নোবেল কমিটির বাঙালি সদস্য। তবে দুর🦹্গাপুজোর মধ্যেই এটা বাড়তি পাওনা বাঙালি তথা ভারতবাসীর কাছে। কিন্তু বাংলার মানুষের জন্য ভাবনা তাঁকে বিদেশ থেকে আবার বঙ্গভূমিতে নিয়ে এল। কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে তিনি একটি হোটেলে আছেন। বঙ্গসন্তান যে নোবেল কমিটির সদস্য তা অনেকেই জানেন না। নোবেল পুরষ্কার যাঁরা পান তাঁদের নাম শোনা যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেন কিংবা অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সকলেরই জানা। কিন্তু এই নোবেল পুরষ্কার কারা পাবেন তার দায়িত্বে যে একজন বাঙালিই আছেন সেটা কিন্তু অনেকেরই অজানা। কারণ তিনি নিজেকে আলোকবৃত্তের বাইরেই রাখতে চান। অর্থাৎ প্রচারের আলোয় আসতে চান না। হ্যাঁ, তাঁর নাম অসীম কান্তি দত্তরায়।
কিন্তু হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল সেটা হতে দেয়নি। ভারতবর্ষের গর্ব, যিনি বিশ্বে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছেন, আজ তাঁকে নিয়ে আসা হল বাংলার আলোকসজ্জার মাঝে। কলকাতা বিমানবন্দরে নামার খবর আগেই ছিল। তাই তাঁকে ধরে ফেলা গেল। এখন তিনি কলকাতাতেই আছেন। এই অসীম কান্তি দত্তরায় একজন বাঙꦗালি এবং বাংলার গ্রামের মানুষ। নদিয়া জেলার গাংনাপুর গ্রাম থেকে নিজের মেধার পরিচয় দিয়েই আজ নোবেল কমিটির সদস্য। এটা বাংলার গর্ব তো বটেই, ভারতবাসীর কাছেও গর্বের। তবে বাংলাকে তিনি ভোলেননি। আবার ছুটে এসেছে♈ন এই বাঙালি চিকিৎসা বিজ্ঞানী। যিনি প্রত্যেক বছর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, কোন চিকিৎসা বিজ্ঞানী নোবেল পাবেন।
এই বঙ্গসন্তানের হাত ধরেই গত ৬ বছরে অনেকেই নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। হাসি মুখে সেই পুরষ্কার তুলে দেওয়াতেই তাঁর আনন্দ প্রাপ্তি ঘটেছে। তবে তিনি কিছু কম বড় দিকপাল নন। এখন তিনি অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ বিভাগের অধ্যাপক। নদিয়ার এই অপরিচিত গ্রাম থেকে উঠে আসতে তাঁকে অনেক চড়াই–উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। ১৯৫৫ সালে এই নদিয়ার গাংনাপুরেই জন্ম অসীম দত্তরায়ের। একেবারে গ্রামের পাঠশালাতেই প্রাথমিক শিক্ষা নিয়েছিলেন এই বঙ্গসন্তান। তখন জীবনটা বেশ কঠিন ছিল। মধ্যবিত্ত পরিবারে ছিল আর্থিক সংকটও। কিন্তু এত সব প্র💦তিকূল পরিস্থিতি তাঁর মেধাকে ধামাচাপা দিতে পারেনি। সরকারি প্রাইমারি স্কুল জীবন আজও তিনি ভোলেননি। অশ্বত্থ গাছের নীচে করা পড়াশোনার দিনগুলি তাঁকে আজও আবেগপ্রবণ করে তোলে।
অসীম কান্তি দত্তরায় প্রাথমিক স্কুলের পাঠ শেষ করে তৎকালীন সময়ে গাংনাপুর হাইস্কুলে ভর্তি হন। তারপর রানাঘাট কলেজ, বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ হয়ে একেবারে সাত সমুদ্র পার করে পাড়ি দেন আমেরিকায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্যই পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায়। তারপর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক এবং মুখ্য বিজ্ঞানীর ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি। নিজস্ব গবেষণায় তুলে ধরেন মানুষের হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কেমন করে কমানো যায়। ১𒀰৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত আমেরিকার ডেটন এবং ওহিও–তে ভেটেরনস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র রিসার্চ হেলথ অফিসার, রাইট স্টেট ইউনিভার্সিটিতে মেডিসিন এবং বায়ো কেমিস্ট্রির অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর হিসাবে কাজ করেন। তারপর ১৯৯০–২০০১ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনের রাওত রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফꩵ অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ্য বিজ্ঞানী হিসাবে কাজ করেন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ে (নরওয়ে) চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যাপক।
এই বাঙালি তথা ভারতের সন্তান ড. অসীম কান্তি দত্তরায়ের মেধার জন্য নোবেল সিলেকশন কমিটিতে ডাক পান। নোবেল কমিটির সাধারণ সম্পাদক থমাস আরম্যান এই বঙ্গসন্তানকে ইমেল করেই ডেকে নেন। যা একপ্রকার দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। এবার তিনি এসেছেন কলকাতায় বাংলাকে উপহার দিতে। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে তাঁর আবিষ্কৃত ওষুধ বাজারে নিয়ে আসতে চান তিনি। তাতে শুধু বাংলার মানুষের উপকার হবে না, গোটা দেশের মানুষ বিনা অস্ত্রপচারে হৃদযন্ত্র স্বাভাবিক রাখতে পারবেন। ৩৭০টি গবেষণাপত্র রয়েছে তাঁর। পাঁচটি আন্তর্জাতিক পেটেন্ট রয়েছে অসীমবাবুর নামে। ফুড অ্যান্ড রিসার্চ জার্নালের মুখ্য সম্পাদক এই বঙ্গসন্তানই। বিজ্ঞানজগৎ এই কৃতি সন্তানের আবিষ্কারকে ফ্রুট ফ্লো নামে চেনে। নরওয়ের অসলো থেকে আজ তিনি বাংলার মাটিতে এসে দাঁড়ালেন। একটি বেসরকারি সংস্থাꦉ ইয়ার্ডল্যাবস প্রাইভেট লিমিটেড বরাত পেয়েছে তাঁর ওই আবিষ্কৃত ওষুধের। মানুষের হৃদযন্ত্র বিকল হওয়া আটকাতে ওষুধ আবিষ্কার করেছেন এই বাঙালি চিকিৎসা বিজ্ঞানী। অসীমবাবুর দাবি, অস্ত্রোপচার না করেও এই ওষুধ দিয়ে মানুষের হৃদযন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখা যায়। আগামী ২৯ অক্টোবর বালিগঞ্জের জিডি বিড়লা সভাঘরে সাংবাদিক সম্মেলন করে অসীম কান্তি দত্ত﷽রায় নিজের আবিষ্কৃত ওষুধের নাম এবং যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত জানাবেন।