প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বিরাট শূন্যতা। শোকস্তব্ধ সিপিএম নেতৃত্ব। শুধু সিপিএম নেতৃত্বই নয়, বহু সাধারণ মানুষের চোখেও আজ জল। একজন সহজ সরল রাজনীতিবিদকে হারাল গোটা দেশ। বিরাট শূন্যতা। গোটা রাজনৈতিক জীবনে বার বার ছুটে গিয়েছেন উত্তরবঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও কোচবিহার থেকে শিলিগুড়ি বার বার গিয়ে পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। সেই দিনগুলোর স্মৃতি বার বার ফিরে আসছে উত্তরবঙ্গের সিপিএম নেতাদের মনে। উত্তরবঙ্গের প্রতি বুদ্ধদেবের ছিল আন্তরিক প্রেম। এখানকার লোকসংস্কৃতি🎐র 🐬প্রতি ছিল প্রবল টান।
বাংলার প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা কোচবিহারের সিপিএমের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মৃতিচারণা করলেন হিন্দ꧟ুস্তান টাইমস বাংলার প্রতিনিধির সঙ্গে। কথা বলতে বলতেই আবেগে কেঁদে ফেললেন বাংলার 🐷প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়।
স্মৃতিচারণায় কী বললেন অনন্ত রায়?
‘খবরটা শোনার পর থেকেই মন ভালো নেই। জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকার সময় থেকেই তাঁর কাছে যেতাম। এত স্নেহ করতেন, আমি কখনও ভুলব না। জেলা সম্পাদক চন্ডী পালের মুখে শুনতাম, বু্দ্ধবাবꦡু বলতেন, হ্যাঁ রে, ছেলেটা ঘুমোয় না সারা দিন রাত চষে বেড়ায়। উন্নয়নের ক্ষেত্রে সব ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন, নানা পরামর্শ দিতেন। ২০০৬ সাল, বিধানসভা নির্বাচন। পার্টি থেকে শুনলাম বিধানসভা ভোটে দাঁড়াতে হবে আমাকে। সেই মতো আমি দাঁড়ালাম। জিতে গেলাম। আর প্রথমবার বিধায়ক হয়েই আমায় বনমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হল। হয়তো কলকাতায় রয়েছি। বুদ্ধবাবুর ফোন করতেন, চলে আয় আমার চেম্বারে। নানা বিষয় নিয়ে জানতে চাইতেন। নানা পরামর্শ। বলতেন, বন্য জীবজন্তু যাতে সুরক্ষিত থাকে সেটা সবসময় দেখিস। বার বার বলতেন, পর্যটকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেটা দেখিস।’
অনেক কথা মনের মধ্য়ে ভিড় করে আসছে। অসুস্থ ছিলে🔯ন ইদানিং। ♋তবু তো মাথার উপর ছাতার মতো ছিলেন।
অনন্ত রায় বলেন, ‘অভিভাবককে⛦ হারিয়ে ফেললাম। দাদার মতো ছিলেন। কোচবিহারের দেশি আলু খেতে খুব ভালোবাসতেন। আর নুনিয়া ভোগ চাল। তোর্ষার বোরোলির কথাও খুব বলতেন। এখানকার লোকসংস্কৃতিকে গোটা দেশের সামনে তুলে ধরতে তিনি নানা ღপ্রয়াস চালিয়েছেন। পঞ্চানন বর্মার স্মৃতিতে তিনি নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। জননেতা ছিলেন। তাঁর সহজ সরল জীবন খুব কাছ থেকে দেখতাম আর মুগ্ধ হয়ে যেতাম। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে মাঝেমধ্যে যেতাম। অত ছোট্ট ফ্ল্যাটে থাকতেন। ’
‘একবার বললেন, একদিন হলং বাংলোতে থাকার ইচ্ছা। আমি বললাম জ্যোতিবাবুর প্রিয় বাংলো ছিল এটাই। বুদ্ধবাবুও একরাত ছিলেন। কত স্মৃতি। ꦬউত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য নানা স্বপ্ন নানা পরিকল্পনার কথা বলতেন। কখনও বিভেদ চাইতেন না। পড়াশোনা করতেন প্রচুর। নিপাট বাঙালিয়ানা।'
🐼কান্নায় ভেঙে পড়েন অনন্ত রায়। ফোনের ওপারে তখন প্রিয়জন হারানোর বুকফাটা কান্না। বললেন, 'ভাইয়ের মতো স্নেহ করতেন। আমি কোনওদিন ভুলব না। এই উত্তরবঙ্গের প্রতি তাঁর ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা। এটা ভোলার নয়। এই উত্তরবঙ্গকে সাজিয়ে তুলতে তিনি সবসময় চেষ্টা করে গিয়েছেন। ’