এবার এক যাত্রায় পৃথক ফল দেখাল নকশালপন্থী দল সিপিআই(এম–এল) লিবারেশন। বিজেপি ও তৃণমূলকে একসারিতে বসাতে রাজি নয়। এমনকী বিপদ মানতে তারা যে রাজি নয়, সেই অবস্থানই বজায় রাখছে তারা। ফলে বৃহত্তম বাম ঐক্যে নীতিগত পার্থক্যে ফাটল অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কারণ কলকাতায় এসে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য সওয়াল করলেন, বাংলায় তৃণমূল সরকারে থাকলেও বামেদের নিশানা থাকা উচিত বিজেপি’র দিকে।বিহারে সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে মহাজোটের শরিক হয়ে ১৯টি আসনে লড়ে ১২টি জিতেছে লিবারেশন। এদিকে বিহারে এই সাফল্যের পর দীপঙ্করবাবুর মত, বাংলাতেও বামেদের বিজেপিকেই ‘এক নম্বর প্রতিপক্ষ’ চিহ্নিত করে লড়াই করা উচিত। যদিও লাল পার্টির (সিপিএম) পাল্টা ব্যাখ্যা, বাংলার রাজনৈতিক বাস্তব পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিজেপি–তৃণমূল, কাউকেই ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। কলকাতা প্রেস ক্লাবে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘তৃণমূল বা অন্য কোনও দলকেই বিজেপি’র সঙ্গে একাসনে বসানো যায় না। অসম, ত্রিপুরা এবং বিহারে যেভাবে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে, সেই অভিজ্ঞতা মনে রেখে বামেদের নিশানা বিজেপি’র দিকেই থাকা উচিত। বিজেপি অনেক বড় বিপদ।’মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা আগামী ২৬ নভেম্বরের ধর্মঘটেও তৃণমূল শামিল হচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতে লিবারেশন নেতার যুক্তি, তৃণমূলের বিরুদ্ধেও প্রচার বামেদের করতে হবে। কিন্তু বিজেপি–তৃণমূলকে একাসনে বসালে চলবে না। তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়েরা ইতিমধ্যেই দীপঙ্করবাবুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে বামেরা বিজেপি’র বিরোধিতায় বেশি নজর দিলে তা ভাল উদ্যোগ। দীপঙ্করবাবু অবশ্য পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘আমরা কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে জোট বা সমঝোতা করার কথা বলিনি।’আজ, বৃহস্পতিবার ঢাকুরিয়া থেকে মিছিলের পরে যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডের সভায় থাকার কথা তাঁর। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘আমাদের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। বাংলায় জোট করে বিজেপিকে আসন পাইয়ে তাদের জন্য জমি তৈরি করেছিল তৃণমূল, এই ইতিহাসও সকলের জানা। বাংলায় গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে ফের প্রতিষ্ঠা করতে বিজেপি–তৃণমূল, দু’পক্ষকেই পরাস্ত করতে হবে।’