🧸 নির্বাচন থেকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব—বারবার তাঁকে সরব হতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তার পরও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কোপে পড়তে হয়নি কখনও তাঁকে। একটু বকাঝকার উপর দিয়েই গিয়েছে। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে শুরু করে মন্তব্য নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কখনও কখনও দলের অস্বস্তিও বাড়িয়েছে। কিন্তু তিনি যা বলেন তার বেশিরভাগ কথাই সত্য। হ্যাঁ, তিনি বলাগড়ের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তথা দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মনোরঞ্জন ব্যাপারি এবার রিকশা চালিয়ে বিধানসভা যাত্রা করলেন। আর তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
♏আজ, মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাস থেকে প্যাডেলে পা রেখে শুরু হয় তাঁর বিধানসভা যাত্রা। খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে বারবার নিজেকে উল্লেখ করেছেন তিনি। আর তাই এই সিদ্ধান্ত বলেও জানিয়েছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। মাটির কাছাকাছি থাকতে হবে। মানুষের কথা শুনতে হবে। আর মানুষের জন্য কাজ করে যেতে হবে—এটা খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তিনিও এভাবেই চলেন। তবে এভাবে বিধানসভা যাত্রার প্রাক্কালে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি। নিজের মতামত খোলাখুলি প্রকাশ করে সূক্ষ্ম খোঁচা দিয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। গ্রামবাংলার সংস্কৃতির প্রতি কলকাতার নাগরিকদের পরোক্ষ অবজ্ঞা যেন ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনীতে।
আরও পড়ুন: জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের নাম বদল হচ্ছে, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার?
কিন্তু কেন রিকশায় করে যাত্রা মনোরঞ্জন ব্যাপারির? এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র উঠছে। তবে তার জবাব ফেসবুক পোস্টেই দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বলাগড়ের বিধায়ক। ২০২১ সালে যখন বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বলাগড় থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা তখন তাঁর এলাকা থেকে স্লোগান উঠেছিল—‘রিকশা যাবে বিধানসভায়’। খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হয়েই তাঁকে বিধানসভায় দেখতে চেয়েছিলেন বলাগড়বাসী।🔯 তাই বিধায়ক এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘এক রিকশাচালক সম্মানীয় বিধানসভার সদস্য হিসেবে বিধানসভায় এসেছেন। কিন্তু সরাসরি রিকশা বিধানসভায় আসেনি। আসতে পারেনি। কারণ, কলকাতা শহরে প্যাডেল রিকশা চলে না।’
আসলে কলকাতায় গাড়ির সংখ্যা বেশি। সেখানে প্যাডেল রিকশা চললে যানজটের সৃষ্টি হবে। যদিও এসব বাধা মানতে নারাজ মনোরঞ্জন। বিধানসভায় রিকশা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিধায়ক। আজ, মঙ্গলবার বিধায়ক মনোরঞ্জন নিজে প্যাডেল করেন। শহরের রাস্তায় আজ তাই দেখা গেল অন্য ধাঁচের ছবি। রাজপথে রিকশা চালাচ্ছেন শাসকদলের বিধায়ক। আসলে এটাই তো তাঁর প্রকৃত সত্ত্বা। যেটা সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন তিনি। ꦅবিধায়ক হয়েও মনোরঞ্জন ব্যাপারির সাধারণ জীবনযাপন সকলেরই জানা। এখানে কোনও মেকি রাজনীতির বিষয় নেই। তিনি জেলায় টোটোও চালিয়েছেন। শ্রমজীবী মানুষেরই প্রতিনিধি হিসাবেই থাকতে চান তিনি। তাতে তাঁর কোনও লজ্জা নেই।