দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে হল ইতিহাস। প্রথম বার ক্রিকেটে টাইমড আউট। এই নিয়ে তুমুল বিতর্ক, নাগিন ডার্বির উত্তাপ ছড়িয়ে গেল বিশ্বজুড়ে। মাঠের মধ্যে যদিও পিচ থেকে মাত্র একশো মিটার দূরে তার কোনও লেশমাত্র প্রভাব নেই। দিল্লির মাঠের ইস্ট ব্লকে গ্রাউন্ড ফ্লোর ছিলাম গতকাল। জায়গাটা হল মোটামুটি ডিপ কভার বা ডিপ মিড উইকেটের পাশে। সেই ব্লকে মাত্র ১০-১৫ জন শ্রীলঙ্কার ও শতাধিক বাংলাদেশ সমর্থক। বাকিরা ভারতীয় ভালো ক্রিকেট দেখার লোভে মাঠে✨ হাজির। স্বভাবতই বাংলাদেশি🐻দের সোচ্চার সমর্থন ও শাকিবরা ভালো খেলায় তাঁদের দিকেই ঢলে যাচ্ছিল কোটলা থুড়ি অরুণ জেটলি মাঠের জনতা। এর মধ্যেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের সেই বিতর্কিত আউট। প্রথমে কেউ ঠিক করে বুঝতে পারেননি যে মাঠে কিসের জটলা। হঠাৎ বিগ স্ক্রিনে দেখা গেল যে বীতশ্রদ্ধ হয়ে ম্যাথিউজ নিজের হেলমেট ছুড়ে ফেলছেন ডাগআউটে। কিছু একটা যে ঘটেছে বুঝতে পেরে দ্রুত মোবাইলে আপডেটের জন্য জনতার সার্চ। পরিস্থিতি সাফ হতেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস বাংলাদেশিদের। শ্রীলঙ্কার সমর্থকদের মুখ ভার।
মাঠে হাজির ছ⛄িলাম একজন ক্রীড়াপ্রেমী হিসেবে, কিন্তু ওই ঢেঁকিদের মতো আমাদেরও অভ্যাস খারাপ। সুযোগ যখন পেয়েছি, হাতে গরমে বাংলাদেশি সমর্থকদের টাটকা প্রতিক্রিয়া নেওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের শেষে তাই তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে গিয়ে কথা বললাম এই আউটটি 🔜নিয়ে। এই আউটটি কী ও কেন, সেটা নিয়ে সবার মনে খুব স্পষ্ট ধারণা আছে তেমন নয়। কিন্তু ভরসা আছে শাকিবের ওপর। তাই তাঁদের কথায় শাকিব ভাই যখন করেছেন, ঠিকই করে থাকবেন। অকৃত্রিম ভালোবাসা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকার প্রতি।
সন্ধ্𓂃যা নামতেই সক্রিয় হল ডিজে। একের পর এক হিন্দি গানে পা মেলালেন অতিথিরা। কেউ এসেছেন ম্যাচ দেখতে অনেকে আবার কর্মসূত্রে বা পড়াশোনার জন্য আছেন দিল্লিতে। যত টার্গেট কমতে লাগল, উন্মাদনা বাড়ল বাংলাদেশ সমর্থকদের মধ্যে। যাঁরা একটু আগেও নাগিন ডান্স কর൩তে লজ্জা পাচ্ছিলেন, ভারতীয় দর্শকদের আবদারে এবার জমিয়ে নাচলেন। শাকিবে মন্ত্রমুগ্ধ টাইগারদের কাছে বিতর্ক তখন শুধুই ফুটনোট। শেষের দিকে ম্যাথুউজের ঘড়ি অভিব্যক্তিতে ফের জ্বলে উঠল গ্যালারি। পরপর উইকেট নিয়ে তখন ম্যাচে ফিরছেন প্রাক্তন বিশ্বজয়ীরা। হঠাৎ করেই চিন্তার মেঘ বাংলাদেশিদের মুখে।
হৃদয় অবশ্য মন ভাঙেননি। এসেই চালিয়ে খেলে ইতিহাস গড়লেন, প্রথমবার আইসিসি ট্রফিতে শ্রীꦯলঙ্কাকে হারাল বাংলাদেশ। মাঠে মানুষের উচ্ছ্বাস তখন বাধভাঙা। পড়শিরা তো কার্যত আনন্দের চোটে অন্য দুনিয়ায়। বিমর্ষ মুখে বাড়ির পথে গুটিকতক শ্রীলঙ্কার সমর্থক। ফেরার পথে রাস্তায় দেখা হল এক বয়স্ক বাংলাদেশ সমর্থকের সঙ্গে। সেই আক্রম খানদের আমল থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পতন ও উত্থানের সাক্ষী। ক্রিকেটটা জেন্টেনম্যানস গেম ছিল আগে, যাই হোক যুগ বদলেছে, কার্যত স্বগোক্তি করতে করতেই মেট্রো ধরার জন্য এগিয়ে গেলেন তিনি।
সত্যই সেই আগের দিন আর নেই, রাজা রাজড়াদের শখের খেলা নয়, এখন গ্ল্যাডিয়টরদের মতো যুদ্ধ হয়. জিত-হারে বদলে যায় জীবন, হারের রক্তাক্ত দাগ নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়ꦡ আরেক বিশ্বকাপের জন্য। সেই কথাই বোধহয় ম্যাচের শেষে বোঝাতে চেয়েছিলেন শাকিব। তবে শেষ বিচারে ইতিহাসে জায়গা করে নিলেন ম্যাথিউজ-শাকিব এটা একেবারে নিশ্চিত। কে ভিলেন, কে হিরো, তা হয়তো কালের বিচারই ঠিক ক꧑রে দেবে।