বিধানসভা নির্বাচন দোড়গোড়ায়। তার মধ্যেই বড় ফাটল ধরল দুই বাম শরিকে।বাংলায় তাঁদের আসল শত্রু কে? ‘তৃণমূল’ না—‘বিজেপি’ এই প্রশ্নে তরজা তুঙ্গে উঠেছে দুই বাম শরিক সিপিআইএম ও সিপিআই(এমএল)–এর মধ্যে। নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার মাসখানেক আগেই কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, ‘তাঁরা কোনও জোটের পথে হাঁটবেন না’। বরং দৃঢ়তার সঙ্গে আরও জানিয়েছিলেন, এই রাজ্যের ১২টি আসনে একাই লড়বে সিপিআই(এমএল) লিবারেশন।বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়ে গেলেও দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের দল এখনও একই অবস্থানে অনড়। কারণ, বাংলায় বিজেপি বিরোধিতায় বামেরা ‘নমনীয়’। তবে নির্বাচন পর্যন্ত আদৌ এই জোট টিকবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের। তাঁর আশঙ্কা, ‘নির্বাচনের আগে এই জোট কী অবস্থায় দাঁড়াবে, তা সময়ই বলবে।’ তবে ২৮ ফেব্রুয়ারির সংযুক্ত মোর্চার ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে ইতিবাচক মত পোষণ করেছে সিপিআইএমএল। ব্রিগেড নিয়ে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘নিসঃন্দেহে এটা বড় সমাবেশ। সেখান থেকে এই রাজ্য তো বটেই, দেশেরও অনেক প্রশ্ন উঠে এসেছে।কৃষি আইন, মূল্যবৃদ্ধি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ—সহ মুসলিম জনজাতির নিরপত্তাহীনতার মতো দিকগুলি নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে এই সমাবেশে। যা ইতিবাচক বলেই মত দীপঙ্করবাবুর।কিন্তু বিহারে ‘একজোট’ হয়ে লড়লেও, এই রাজ্যে কেন লিবারেশন, সংযুক্ত মোর্চায় শামিল হল না? এই প্রশ্নের উত্তরে দীপঙ্করবাবুর জবাব, ‘তার একমাত্র কারণ হল, এই রাজ্যে যেভাবে বিজেপি বিরোধিতা হওয়া উচিত ছিল বলে আমরা মনে করছি, তা হচ্ছে না। বিহারে এনডিএ–কে হারানোই ছিল মূল লক্ষ্য।’ তাই বিহারের জোটের উদ্দেশ্য একদম স্পষ্ট রয়েছে।এই বিষয়ে সিপিআইএমের একাংশের অভিযোগ, লিবারেশন ‘তৃণমূল ঘেঁষা’। যদিও সিপিআইএমএল এই অভিযোগ নস্যাৎ করেছে। দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলার মানুষ জানেন, আমরা কোনওদিনও তৃণমূল ঘেঁষা ছিলাম না, এখনও নই। বিহারে যে সংযুক্ত শক্তি বিজেপির মোকাবালি করেছিল, তারা এই রাজ্যে ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছে। তবে বিহারের বিরোধী শক্তি সে রাজ্যে বিজেপি জোটকে ক্ষমতা দখল করা থেকে রুখতে পারেনি। এখন পশ্চিমবঙ্গের দলগুলির এই নয়া সমীকরণ পৃথক ফলাফল নিয়ে আসতে পারে কি না, তা বলবে ২ মে’র ফলাফল।