'মিছিলেও প্রেম হোক, ভেঙে যাক মোহ/তুমি সাজো ব্যারিকেড, আমি বিদ্রোহ', কিংবা 'মাঝপথে হাত ছাড়ল কজন, হয়নি আমার লোক গোনা/থাকার যে সে এমনই থাকে, হারায় যাঁরা যোগ্য না'। আমরা যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় কম বেশি অ্যাক্টিভ থাকি তাঁদের আশা করি উল্লিখিত কাপলেটগুলোর লেখকের পরিচিতি দিতে হবে না। লেখা পড়েই তাঁরা বুঝে গিয়েছেন আমি কার কথা বলছি। সুব্রত মাইতি, ওরফে সুব্রত বারিষওয়ালা বা এখন যাঁকে সিনে জগতের লো༒কজন বারিষ বলেই চেনেন সেই মানুষটি। তাঁর লেখা প্রথম গান ‘ভালোবাসার মরশুম’ মুক্তি পাওয়ার পরই সুপার ডুপার হিট করেছিল। আবার সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘বিয়ে বিভ্রাট’-এর ‘জিয়া তুই ছাড়া’ গানটির ক্ষেত্রেও একই জিনিস। বারিষের লেখা অন্যান্য গানগুলোও এই প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তাঁর সঙ্গে এই বর্ষার মরশুমে আড্ডার আ💟সর জমেছিল HT বাংলার।
লেখালিখি শুরু কবে থেকে?
বারিষ: সালটা ২০১৫। ফেসবুকে জয়েন করে দেখলাম সবাই লিখছে। কেউ কাউকে সমালোচন♛া করছে না। উৎসাহ দিচ্ছে। সেই দেখেই আমার লেখা শুরু। যদিও তার আগে স্কুল ম্যাগাজিনের জন্য লিখতাম।
অন্যকে দেখে নিয়মিত লেখা শুরু, সেটাই কখনও পেশা হবে ভেবেছিলেন?
বারিষ: না, পেশা হবে ভাবিনি। কিন্তু আমি বরাবরই গান ল⛦িখতে চাইতাম। ছোট থেকেই আমি প্যারোডি বানাতাম। আমার মনে হতো আমি সুর শুনলেই গান লিখতে পারি। ফলে সেটা নিয়ে একটা কাজ করার ইচ্ছে তো ছিলই। আর এখ🅠ন সেটা করতে ভালো লাগে, লাগছে।
গান লেখার আগে, এই জগতে আসার আগে কী করতেন?
বারিষ: আগে না এখনও করি। আমি সাং🅺বাদিক। একই প🐼েশায় আছি আমরা।
আরে বাহ তাই নাকি! তাহলে প্রফেশনালি গান লেখা কবে শুরু করলেন?
বারিষ: ২০১৭-২০১৮ সাল থেকেই ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেলের জন্য কাজ করতাম। তবে ২০২০ সালে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম ব্রেক পাই। রণজয়দার (রণজয় ভট্টাচার্য) হাত ধরে সুযোগ আসে। উনি আমায় একদিন বলেন 💙সান বাংলায় একটা সিরিয়াল হচ্ছে অনেকগুলো গান আছে, আমার সঙ্গে লিখবেন? আমি রাজি হয়ে যাই। সেই ‘হারানো সুর’ দিয়ে💎ই শুরু হয় পথচলা। যদিও ২০২০ সালে কথা হলেও কাজটা প্যান্ডেমিকের জন্য পিছিয়ে যায়। ২০২১ সালে হয় কাজটা। সেখানে ৮-১০টা গান ছিল।
আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ? বা কাজের সুযোগ?
বারিষ: এটা একটা মিরাকেল। একদিন কফি হাউজে বসে একটা দিদির সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতেই বলি যে সৃজিতদা নতুনদের নিয়ে কাজ করছে। ওখানে সানাই বলে একজন কাজ করছে জানে♕ন? তখন দিদিটা জানান সানাইদা ওঁর পরিচিত🐻। তখন তিনি তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে জানতে পারেন একটি গানের জন্য ওঁরা তখনও লিরিসিস্ট খুঁজছেন। সেই ভাবেই যোগাযোগ হয় আর কী। ভালোবাসার মরশুম যখন লক হয় তখনও আমার আর সানাইদার দেখা হয়নি। সৃজিতদার সঙ্গেও আলাপ হয়নি। তবে...
বলুন?
বারিষ: আমি ‘হেমলক সোসাইটি’ দেখার পর থেকেই ভাবতাম আমি যদি কখনও ❀এই জগতে কাজ করি এই মানুষটার (সৃজিত ম💛ুখোপাধ্যায়) সঙ্গে কাজ করতে চাই। তাঁর কাজের টাইটেল কার্ডে আমার নাম দেখতে চাই।
যে কটা গান লিখেছেন সব কটাই হিট, এটা কীভাবে সম্ভব?
বারিষ: এটা পুরোপুরি ভাগ্যচক্রে ব্যাটে বলে লেগে ছয় হচ্ছে। ‘X=প্রেম’ আমার প্রথম কাজ হলেও সেটা মুক্তি পাওয়ার আগে ‘অল্প হলেও সত্যি’ বলে একটা ছবি মুক্তি পেয়ে যায়, সেখানে আমার একটি গান ছিল, ‘মুখ ফেরায় না মন’। সেই গানটিও অনেক মান🍰ুষ শুনেছেন। পছন্দ হয়েছে। তবে এটা আমার একার কৃতিত্ব নয়। আমার ♉লেখা, পরিচালকদের সুর করা, গায়কদের গাওয়া সবটা মিলিয়েই এটা হয়েছে। সঙ্গে আরও একটা জিনিস আছে।
আরও পড়ুন: 'জনসংযো💛গ হারাচ্ছে বাংলা ছবি', কেন এমনটা মনে করেন ‘আজকের সাজাহান’-এর সুব্রত ওরফে ঋদ্ধি
কী?
বারিষ: ‘ভালোবাসার মরশুম’ অত জনপ্রিয🌼় হয💜়েছিল কারণ তার মার্কেটিং ভালো করে হয়েছিল। এসভিএফের মতো সংস্থা যেভাবে গানটার প্রচার করেছিল সেটার কথা বলতেই হবে। সঙ্গে সৃজিতদার গাইডেন্স তো ছিলই।
এত মানুষের এত ভালোবাসা পাচ্ছেন অল্প দিনেই, অনুভূতি কেমন?
বারিষ: এটা আমার কাছে বেশ চাপের ব্যাপার। মানে আমি একটু চাপ বা ভয়েই থাকি। বারবার মনে হয় এত মানুষের আমার কাজ ভালো লাগছে, পরেরবার সেই উচ্চতায় 🌟পৌঁছতে পারব তো? যদি না ভালো হয় তখন? ফলে এটা দায়িত্ব থাকেই। আমি খুশিতে ডগমগ হয়ে সেটা ভুলে যাই না।
আচ্ছা অনেক সিনে জগৎ নিয়ে গল্প হয়ে গিয়েছে এবার অন্য প্রসঙ্গে আসা যাক। সমসাময়িক কবিরা যখন বহু আগেই বই প্রকাশ করেছেন আপনি তখন এত দেরি করলেন কেন?
বারিষ: আমি নিজেকে🎀 লেখক বা কবি কোনওটাই মনে করি না। আমি গানের জগতের লোক। সেটা ভেবেই আমি খুশি। আমি সাহিত্য জগতে নাম করব বলে বই প্রকাশ করিনি, বা এই বই প্রকাশ করলাম বলে আগামীতে আরও বই প্রকাশ করব এমনটা নয়। সবাই আমার লেখাগুলো একসঙ্গে পেতে চেয়েছিল তাই ব😼ই প্রকাশ করেছি।
কিন্তু আচমকা এমন নাম কেন? বারিষওয়ালার নেপথ্যে লুকিয়ে কোন কারণ?
বারিষ: আমার পরিবার অন্যান্য বিষয় সাপোর্ট করলেও এটা কখনও চায়নি যে আমি ক্রিয়েটিভ জগতের এই অনিশ্চয়তার মধ্যে আসি, বা কাজ করি। তাই আমি ঠিক করি যদ𝐆ি এখানে নাম করি নিজের দেওয়া নামেই করব। তাই ছদ্মনাম নিই। আর বারিষ বা বারিষওয়ালা কারণ আমি আমার শব্দের বারিষে সবাইকে ভেজাতে চেয়েছিলাম।
আরও পড়ুন: ꦬক্যামেরার সামনে কাজ করব কখনও ভাবিনি, নেপথ্যে থাকতে চেয়েছিলাম: বিশ্বাবসু
যে মানুষটা এত মানুষের মনে প্রেমের ছোঁয়া এনেছেন, এত ভালো ভালো প্রেমের গান উপহার দিয়েছেন তাঁর জীবনের প্রেমের গল্প শুনি একটু?
বারিষ: এই রে! আমি যে নিষ্প্রেম মানুষ। সেই অর্থে কোনও নির্দিষ্ট প্রেম নেই। স🥀ব ওই পূর্বরাগ পর্যন্ত এসেই থেমে যায়। তাই মন ফুরফুরে থাকে আর কী!