নিঃশর্তভাবে কঙ্গনা রানাওয়াত বিএমসির বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে দাখিল করা মামলা তুলে নিলেন। ২০১৮ সালে কঙ্গনাকে তাঁর খারের অ্যাপার্টমেন্টে অবৈধ নির্মাণের জেরে একটি নোটিশ ধরিয়েছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা। সেই নোটিশের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছিলেন অভিনেত্রী। কঙ্গনার মামলা তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া আগামী ৪ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে, আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন অভিনেত্রীর আইনজীবী বিরেন্দ্র সারাফ। তিনি যোগ করেন, কঙ্গনা আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট নিয়মিতকরণের জন্য বিএমসির কাছে আবেদন জানাবেন। আইন মেনে সেই আবেদন বৈধ কিনা তা খতিয়ে দেখব বিএমসি। যদি বিএমসির রায় কঙ্গনার বিরুদ্ধে হয়, তাহলে অভিনেত্রী ২ সপ্তাহের সময় পাবেন ফের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার। কঙ্গনার আইনজীবী এই মামলায় অতিরিক্ত ২ সপ্তাহের সময় প্রার্থনা (বিএমসি যদি আবেদন খারিজ করে,তারপর) করেছিলেন আদালতের কাছে, তবে বিএমসির তার বিরোধিতা করে জানান, এই ধরণের দাবি মানাটা সম্ভবপর নয়। বিএমসির আইনজীবী আসপি চিনয় সোনু সুদের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় টেনে বলেন, অভিনেতার আবেদন আইনসম্মত কিনা তা বিচার করবে বিএমসি। পালটা কঙ্গনার আইনজীবী বলেন, সোনু সুদের মামলা নজির হিসাবে তুলে ধরা যেতে পারে না এবং এমনও হতে পারে না যে বিএমসি কঙ্গনার আবেদন নাকোচ করবার পরদিনই তাঁর বাড়ি ভেঙে দিল। এরপর নায়িকাকে অতিরিক্ত দু-সপ্তাহের সময় রক্ষাকবচ হিসাবে দেয় আদালত। সোনু সুদের বিরুদ্ধেও অবৈধ নির্মানের অভিযোগ এনেছে বিএমসি। অভিনেতার আবেদন বম্বে হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সোনু। এরপর সেখান থেকে মামলা তুলে নিয়ে ফের বিএমসির কাছেই তাঁর নির্মাণকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন সোনু সুদ। মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি পৃথ্বীরাজ চৌহান কঙ্গনার আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিঃশর্ত কিনা, তাতে সম্মতি জানান সারাফ। কঙ্গনার পালি হিলসের অফিস বাড়ি গত সেপ্টেম্বরে ভাঙা পড়ে বিএমসির হাতে। অন্যদিকে ২ বছর পুরোনো নোটিশের ভিত্তিতে অভিনেত্রীর খারের অ্যাপার্টমেন্টও ভেঙে দিতে পারে পুরসভা, তেমন খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সেশন কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিনেত্রী। কিন্তু তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়। নিম্ন আদালতে স্বস্তি না মেলায় বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানান কঙ্গনা।নিম্ন আদালতের বিচারক এলএস চৌভান কঙ্গনার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ মেনে নিয়ে বলেন , 'আমি দেখতে পাচ্ছি আবেদনকারী তিনটি ফ্ল্যাটের মালিক, সেগুলিকে তিনি একটি ইউনিটে পরিণত করেছেন। উনি নিজের মতো করে নিকাশি ব্যবস্থা,কমন প্যাসেজে রদবদল করেছেন নিজের সুবিধা মতো, ফ্লোর স্পেশ ইন্ডেক্সকেও উনি যোগ করেছেন বাসযোগ্য অঞ্চল হিসাবে।এগুলি গম্ভীর নিয়ম লঙ্ঘন, অনুমোদিত পরিকল্পনা এখানে মেনে চলা হয়নি যা নির্দিষ্ট অথোরিটি (বিএমসি) দিয়েছিল’। বিএমসি MRTP আইনের ৫৩ (১) ধারা অনুসারে ২০১৮ সালের মে, সেপ্টেম্বর এবং ডিসেম্বরে তিনটি নোটিশ জারি করেছিল কঙ্গনার নামে। সেখানে বলা হয়েছিল কঙ্গনা খারের অর্কিড ব্রিজ বিল্ডিংয়ের অবস্থিত তিনটি ফ্ল্যাট যেন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন, যে পরিকল্পনায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল সেই অনুসারে। অর্থাত্ তিনটি ফ্ল্যাটকে যেন পৃথক করে দেওয়া হয় তা সাফ জানিয়েছিল বিএমসি।