বেঁচে থাকতে যোগ্য সম্মান পাননি, জন্মশতবর্ষেও নিজের শহরেই ‘অপমানিত’ ঋত্বিক ঘটক! মাস꧟ দুয়েক আগেই কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁকে সম্মান জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। অথচ ঋত্বিক ঘটকের ছবির প্রদর্শনীতে এবার রাজনৈতিক বাধা আসবার অভিযোগ! কেন? 'ভাবুন…ভাবা প্র্যাক্টিস করুন'।
১০ ফেব্রুয়ারি কলকাতার একটি সরকারি স্কুলে ঋত্বিক ঘটকের 'আমার লেনিন' তথ্যচিত্র ও তাঁর ছবি 'কোমল গান্ধার'-এর প্রদর্শনী বাতিল হয় স্থানীয় শাসক দলের সমর্থকদের আপত্তির কারণে! ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষ উপলক্🥂ষে দক্ষিণ কলকাতার সাংস্কৃতিক সংগঠন নাকতলা সেতু এই প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে, ৫ ফেব্রুয়ারি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয় বলে বৃহস্পতিবার সংস্থার মুখপাত্র ওঙ্কার রায় জানান।
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারির তৃতীয় সপ🍌্তাহে প্রধান শিক্ষক যখন আমাদের কাছে আসেন তখন তিনি প্রথমে স্ক্রিনিংয়ের বিষয়ে উত্সাহী ছিলেন, এমনকি তিনি ঋত্বিক ঘটকের ভক্ত বলেও উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারির পর তিনি চাপের মুখে পড়েন এবং আমাদের জানান যে ছবিগুলোর প্রদর্শনে সমস্যা আছে।’
এরপর সংস্থাটি স্থানীয় একটি ক্লাবের দ্বারস্থ হয়, কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে তারাও তা প্রত্যাখ্যান করে। ফলস্বরূপ, সাম🅠াজিক ন্যায়বিচার এ🐈বং সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার জন্য প্রতিবাদ সংগঠিত করার ক্ষেত্রেও সক্রিয় এই এনজিওটি নিকটবর্তী বিধান পল্লি এলাকায় রাস্তার পাশে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল, যেখানে কয়েকশ লোক উপস্থিত ছিল।
নাকতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতীন দাস শুরুতে দাবি করেন, বাইরের চাপে নয়, অন্যান্য ব্যস্ততার কারণে বাতিল করা হয়েছে। পরে এইসময়কে তিনি জানান, ‘এলাকায় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক হিসেবে পরিচিত, এমন জনা পাঁচেক আমাকে রাস্তায় ধরে মোবাইল ফোনে একটি ফেস্টুনের ছবি দেখিয়ে জানতে চান, স্কুলে কি🍸 তা হলে লেনিনের প্রদর্শনী হবে? আমি ঠান্ডা মাথায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। তার পর যখন বুঝতে পারি যে, আমার প্রতিষ্ঠান বিতর্কে জড়াচ্ছে, তখন আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ওই সিনেমা দেখানোর অনুমতি বাতিল করে দিই।’
যদিও কোমল গান্ধার নিয়ে কোনও আপত্তি নেই,কারুর। সমস্যা আমার লেলিন ছবিটি নিয়েই। ১৯৭০-এ ভ্লাদিমির লেনিনের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঋত্বিক ঘটক মিনিট ২০ দৈর্ঘ্যের আমার লেলিন তৈরি করেছিলেন। যে ছবি প্রাথমিক সেন্সরশিপ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল, পরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গ✃ান্ধীর হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটমাট হয়। সেই সময় ইন্দিরার সঙ্গে বিযয়টি নিয়ে সাক্ষাৎও করেছিলেন ঋত্বিক ঘটক।
কোমল গান্ধার ঋত্বিক ঘটকের বিখ্যাত ট্রিলজির অংশ, যার মধ্যে ১৯৬০ এর দশকের মেঘে ঢাকা তারা এবং সুবর্ণরেখাও রয়েছে। এই প্রথম নয়, এর আগেও বাংলায় রাজনৈতিক থিমের ছবি প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। অনীক দত্তের 'ভবিষ্যতের ভূত'-এর প্রদর্শনী ঘিরে 𒀰কম হইচই হয়নি। পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ছবিটি পুনরায় মুক্তি দেওয়া হয়। যদিও প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা দাব💝ি করেছিলেন যে বক্স অফিসে খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে ছবিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পরিচালক যুক্তি দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানবিরোধী অবস্থানের জন্যই টার্গেট করা হয়েছিল তাঁকে এবং তাঁর ছবিকে।