নিজের একটি অভಞি🍷জ্ঞতা দিয়ে শুরু করি৷ ২০০৬ সালে কোরবানির ইদে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে থাকতে হয়েছিল৷ প্রিয়জনদের ছাড়া সেটাই প্রথম ইদ৷ ইদের দিন সকালে মন বেশ খারাপ৷
তাই দুপুরের দিকে ঘুরতে বের হয়ে ভাবছিলাম বাংলাদেশের মতো যত্রতত্র পশু জবাই হবে আর বর্জ্য ফেলে রাখা হবে৷ কয়েকটি এলাকা ঘুরে কোথাও গরু জবাইয়ের চিহ্ন এমনকী নাকে কোন দুর্গন্ধও পেলাম না৷ পরে জেনেছি, সেদেশে নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে পশু জবাই দেওয়া হয় না৷ বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও এমনভ🌱াবে করে যেন পরিবেশ দূষণ না হয়৷ অবাক হয়েছিলাম বাংলাদেশের বাস্তবতা ভেবে৷
ইদ মানেই আনন্দ৷ তবে কোরবানির ইদে থাকে বাড়তি আনন্দ৷ কেননা, কোরবানিকে ঘিরে ইদের দিন সকাল থেকে সবার মাঝে ভিন্ন রকম উৎসাহ বিরাজ করে৷ আর সেটা পশু জবাই, মাংস প্রস্তুত ও বিতরণকে ঘিরে৷ পরিবার ও প্রিয়জনদের💎 সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারটা তো আছেই৷
ছোটবেলায় গไ্রামে এরপর ঢাকা শহরে দেখেছি অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র গরু ও ছাগল জবাই করে কত দ্রুত মাংস ঘরে নেওয়া যায়, তা নিয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন সবাই৷ এর উদ্দেশ্য কোরবানির মাংস রান্না করে তা উপভোগ করা৷ এসব কোরবানির ভালো, আনন্দের দিক৷ তবে এর অন্যদিকটি নোংরা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর৷
সে সময় কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা🦹র দিকে নজর দেওয়া হত না৷ পশুর মল-মূত্র ও রক্ত বাড়ির সামনে, আশেপাশে, রাস্তাঘাট ও নর্দমায় ফেলা দেওয়া হত, যা পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি রোগজীবাণু ছড়িয়ে স্বাস্থ্যহানির কারণ ছিল৷ বর্জ্য পচে এমন দুর্গন্ধ ছড়াত, যা সহ্য করা কঠিন ছিল৷
অবশ্য ইদানীং মানুষের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে৷ পশু কোরবানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসনের দিক ⛦থেকেও অনেক ধরনের উদ্যোগ নিতে দেখা য⛦ায়৷
আগের মত গ্রামে যত্রতত্র পশু জবাই না করে ফাঁকা একটি জায়গায় করা হয়৷ কোরবানির পর বর্জ্যসমূহ গর্তে পুঁতে ফেলার উদ্যোগ গ্রহঁ করে৷ কিন্তু পশু জবাইয়ের স্থান ভালোমত পরিষ্কার করা হয় না৷ ফলে রক্ত ও কিছু বর্জ্য ছড়িꦏয়ে ছিটিয়ে থাকে, যা দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণ ঘটায়৷
অন্যদিকে, ঢাকা পরিস্থিতিও উন্নতি হয়েছে৷ পর্যাপ্ত না হলেও কয়েক বছর পূর্বে দুই সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন এলাকায় কোরবানি স্থান নির্ধারণ করে দেয় এবং জনসাধারণকে সেখানে কোরবানি করতে উৎসাহিত করা হয়৷ কোরবানির বর্জ্য দ্রুত সংগ্রহ ও অপসারণের জন্যেও সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদল মোতায়েন থাকে৷ তাঁরা কোরবানির পরে দ্রুত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায়৷ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্জ্য সংগ্রহ করে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যায়৷ বড় শহরগুলোর চিত্র অনেকটা সেরকমই🧸৷
তবে 📖নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাইয়ের যে উদ্যোগ দুই সিটি কর্পোরেশন নিয়েছিল, তা ইতিমধ্যেই ভেস্তে গিয়েছে মানুষের স্বদিচ্ছার অভাবে৷ প্রথম দিকে কিছু মানুষ সেখানে পশু জবাই দিলেও তা আর ধরে রাখেনি৷ বিভিন্ন ꧅অজুহাত যেমন নির্ধারিত স্থান বাড়ি থেকে দূরে, সেখানে পর্যাপ্ত জলের অভাব ইত্যাদি কারণে মানুষ নিজ-নিজ বাসাবাড়ির ভেতরে বা বাইরে জবাই দিয়ে থাকেন৷
এভাবে নির্ধারিত স্থানের বাইরে যেখা꧋নে সেখানে কোরবানি দেয়ার ফলে বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়ে৷ অন্যদিকে, বিশাল জনগোষ্ঠীর তুলনায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা কম হওয়ায় সময়মত বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয় না৷ আবার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবও রয়েছে, যার ফলে কার্যকরভাবে বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণ করা সম্🔯ভব হয় না৷
মোট কথা, ঢাকার কোরবানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অঙ্কটা অনেকটা দু'ধাপ এগিয়ে এ🐻কধাপ পিছিয়ে পড়ার মতো৷ আগের চেয়ে অবস্থা ভালো হলেও বাড়িতে বাড়িতে, রাস্তায় রাস্তায় দিনভর কোরবানি দেওয়ার কারণে বর্জ্য পুরোপুরি পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না৷ রাস্তাঘাটে এবং নর্দমায় পশুর রক্ত ও অন্যান🉐্য বর্জ্য জমা হয়ে দুর্গন্ধ এবং মশার উৎপত্তি ঘটায়৷
জানা যায়, মালয়েশিয়ায় কোরবানির ইদ এখন আরও সুশৃঙ্খলভাবে উদযাপিত হয়, যেখানে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন এবং কমিউনিটি সংগঠনগুলো সক🍎্রিয় ভূমিকা পালন করে৷ যত্রতত্র কোরবানি না হয়ে নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোরবানি করা হয়৷ পশু জবাইয়ের জন্য থাকে নির্দিষ্ট সময়সূচি ও নির্দেশিকা৷ কোরবানির স্থানগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ কোরবানির পরপরই নির্দিষ্টꦏ স্থানগুলোতে ব্যাপক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হয়৷
আমাদের দেশেও তেমনটা সম্ভব৷ এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে, বর্জ্য ব্যবস্থꦕাপনায় মনযোগী হতে হবে৷ আর তাহলেই ঢাকা-সহ পুরো বাংলাদেশে দুর্গন্ধ ও দূষণমুক্ত স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোরবানির ইদ উদযাপন করা সম্𓆏ভব হবে৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া ꧟হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেꩲখেননি।)