অবিশ্বাস্য মানসিক জোর ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অনন্য সাফল্যের সাক্ষী রইল কলকাতার মণিপাল হাসপাতাল। মাত্র ৮ বছর বয়সে ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ে ক্যানসার হয় পৌলমীর। তারপর বড় হয়ে ওঠার পথে এক দীর্ঘ লড়াই। ক্যানসারের মত রোগ আর পাঁচজনের মতো করে জীবনযাপনে মাঝে মাঝেই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি বাধাকেই জয় করেছিলেন পৌলমী। তবে অনিশ্চয়তা তৈরি হয় পরিনত বয়সে এসে সন্তানধারণ নিয়ে। অবশেষে সেই বাধাও পেরিয়ে গেলেন ৩৫ বছর বয়সী পৌলমী ঘোষ।
IVF ছাড়াই সুস্থ সন্তানের জন্ম
সম্প্রতি স্বাভাবিক গর্ভধারণের মাধ্যমে একটি সুস্থ কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন যাদবপুরের বাসিন্দা পৌলমী। প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিশ্বজ্যোতি গুহর তত্ত্বাবধানে সন্তানধারণ ও প্রসবের গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কোনও সহায়তা ছাড়াই সুস্থ সন্তানের জন্ম হয়েছে এইদিন। চিকিৎসক ও হাসাপাতালের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সাফল্য, ওভারিয়ান ক্যানসার থাকতেও সন্তান জন্মের।
আরও পড়ুন - ঢালাও গুণে ভরপুর দুধ-ভাত! কাদের জন্য অমৃত, কাদের জন্য বিষ? খাওয়ার আগে দেখে নিন
গর্ভাবস্থায় অ্যাপেন্ডিক্সের সমস্যা
গর্ভবতী অবস্থায় ৩০ সপ্তাহ পর হাসপাতালে ভর্তি হন পৌলোমি। তার পেটের উপরের অংশে তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। চিকিৎসক সঞ্জয় মণ্ডলের তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করেন। এর পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
আরও পড়ুন - কলাপাতায় কাঁচা আম ডালের পাতুরি! এই গরমের সেরা রেসিপি, মুখে লেগে থাকবে স্বাদ
বিরল সাফল্য
চিকিৎসক বিশ্বজ্যোতি গুহ তাঁর গর্ভাবস্থার অবস্থা প্রথম থেকেই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতেন। তিনি এদিন বলেন, ‘পৌলমীর গর্ভাবস্থা একাধিক কারণে জটিল ছিল—প্রথমত অস্ত্রোপচারের ফলে সমস্যার আশঙ্কা। দ্বিতীয়ত, তাঁর অতীতের জটিল মেডিক্যাল ইতিহাস। এছাড়াও তার গুরুতর অবস্টেট্রিক কোলেস্টেসিস ছিল। পৌলমীর লিভারের সুস্থ ও কার্যকর রাখতে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। তবে এত সব প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি স্বাভাবিকভাবে গর্ভবতী হন, যা একেবারেই বিরল। এমন ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় আইভিএফ -এর সাহায্য লাগলেও পৌলমীর তার দরকার হয়নি। মণিপাল হাসপাতালে এটিই তৃতীয় সফল ‘চাইল্ডহুড ক্যানসার সারভাইভার’ কেস।’