বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আড়ালে পাকিস্তানকে ঋণের ফাঁদে ফেলেছে চিন। এভাবেই আফ্রিকারও একাধিক দেশে চিন ঋণের ফাঁদ পেতে নিজের প্রভাব বিস্তার ঘটাচ্ছে। ভারতকে ঘিরে ধরতে চিন চেয়েছিল বাংলাদেশেও এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে নিয়ে যাবে। সেই মতো বাংলাদেশে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে চেয়েছিল চিন। তবে বাংলাদেশ চিনের এই ফাঁদে পড়ল না। শ্রীলঙ্কাকে দেখে শিখেছে ঢাকা। এই শ্রীলঙ্কাতেই চিন আস্ত একটি বন্দর কব্জা করেছে তাদের ঋণের ফাদে ফেলে। এই একই ভাবে বাংলাদেশকেও ফাঁদে ফেলে এই গভীর সমুদ্র বন্দর দখল করার ছক কষেছিল চিন। তবে আগেভাগেই তা আঁচ করে প্রকল্পে সম্মতি জানাস না চিন।চিনের বিআরআই প্রকল্পে বাংলাদেশ ভৌগলিক ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। পশ্চিমে পাকিস্তানে একটি বন্দর, দক্ষিণে শ্রীলঙ্কায় একটি বন্দরের পর যদি বাংলাদেশে আরও এখটি বন্দর চিন তৈরি করতে পারত, তাহলে ভারতকে তিনদিক দিয়ে ঘিরে ফেলতে পারত চিন। চিন বাংলাদেশের সোনাদিয়াতে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে চেয়েছিল। তবে এটিকে খুব সহজেই সামরিক বন্দরে পরিণত করতে পারত চিন। এই প্রকল্পে তাই সম্মতি না দিয়ে বাংলাদেশ চিনকে বলল যাতে পায়রাতে গভীর বন্দর তৈরি করতে। পায়রা বন্দরে যেতে গেলে ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যানাল অতিক্রম করে পৌঁছাতে হবে। এখানে সামরিক বন্দর তৈরি অসম্ভব।প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পে নাম লেখায়। এরপরই বাংলাদেশের একাধিক প্রকল্পে বেড়েছে চিনের লগ্নি। পদ্মা নদীর উপর রেল ব্রিজেও লগ্নি রয়েছে চিনের। তবে এই প্রকল্পে সাম্প্রতিক কালে ত্রুটি দেখা গিয়েছে। যার জেরে এই প্রকল্প নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এরপরই চিনা সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশি কর্মীদের সংঘাত বেড়েছে। এর আগে পাকিস্তানেও চিনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করার জন্যে। এরপর অনেক প্রকল্পে ঘুষ আদান প্রদানের অভিযোগে চিনা সংস্থার বরাত বাতিল করা হয়।এদিকে কোয়াডভুক্ত দেশগুলির বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে সঙ্গী হিসেবে চেয়েছে চিন। এই প্রেক্ষিতে বেজিংয়ের তরফে একতরফা ঘোষণাও করা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, 'আমরা একটি স্বাধীন দেশ। আমাদের বিদেশ নীতি স্থির করার অধিকার আমাদের নিজেদের।' উল্লেখ্য, ভারত চাইছে যাতে বাংলাদেশকে কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঢাকাও এই বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী বলে মনে করা হচ্ছে। যার জেরে মাথায় হাত পড়েছে চিনের।